মালদা: গত বছর ইউরোপ ও আরবের কয়েকটি দেশে মালদার আম (Mango) রপ্তানি হবে বলে চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু ফলনে ঘাটতি, গুণগতমান নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় শেষ মুহূর্তে সেই চুক্তি বাতিল হয়। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার মরশুমের শুরুতেই আম রপ্তানির বিষয়টি নিয়ে তোড়জোড় শুরু করল মালদা জেলা প্রশাসন। এই নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা অ্যাগ্রিকালচারাল অ্যান্ড প্রসেসড ফুড প্রোডাক্টস এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’র (অ্যাপেডা) কর্তাদের একটি বৈঠক হল সোমবার। সবেমাত্র বাগানে মুকুল ফুটছে, এখন থেকেই আমের গুণগতমান সঠিক রাখতে পরিকল্পনা শুরু করেছে জেলা উদ্যান পালন দপ্তর। সোমবারের বৈঠকে আমের গুণগতমান ভালো করা সহ বিদেশে আম পাঠানোর প্রাথমিক পর্যায়ের সমস্ত বিষয়গুলি যেন মালদায় (Malda) করা সম্ভব হয়, সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। মালদায় পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি আমের প্যাক হাউস রয়েছে। সেটিরও সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
বৈঠকে জেলা প্রশাসন, জেলা উদ্যান পালন দপ্তর ও অ্যাপেডার কর্তাদের মধ্যে আলোচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আগামী মার্চ মাস থেকে জেলার আমচাষিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। কীভাবে আমের পরিচর্যা করলে সেই আম বিদেশে পাঠানো সম্ভব হবে এই বিষয়গুলি নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে শিবিরের মাধ্যমে কৃষকদের সচেতন করা হবে।
মালদা ম্যাঙ্গো মার্চেন্টের সভাপতি উজ্জ্বল সাহা বলেন, ‘এবছর বিদেশে আম পাঠাতে প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ এখন থেকে শুরু করছে জেলা প্রশাসন। এতে করে অনেকটাই সুবিধা হবে জেলার আম ব্যবসায়ীদের।’ একই বক্তব্য মালদা জেলা উদ্যান পালন দপ্তরের আধিকারিক সামন্ত লায়েকের।
মালদা জেলা উদ্যান পালন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মরশুমে মালদা জেলায় ৩১ হাজার ৮১২ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। আবহাওয়া আম চাষের পক্ষে অনুকূল থাকায় বাগানে প্রায় ৬০ শতাংশ গাছে মুকুল ফুটতে শুরু করেছে। এইরকম আবহাওয়া থাকলে আগামীতে বাকি গাছেও ব্যাপকভাবে মুকুল ফুটবে। গত বছর মালদা জেলায় আমের উৎপাদন হয়েছিল ২ লক্ষ ২০ হাজার মেট্রিক টন। স্বাভাবিকের থেকে ফলন অনেক কম হয়েছিল। তবে এই বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় উদ্যান পালন দপ্তরের কর্তারা আশাবাদী জেলায় প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ মেট্রিক টন আমের উৎপাদন হতে পারে। তবে সমস্তটাই নির্ভর করছে জেলার আবহাওয়ার উপর।’
অ্যাপেডার রিজিওনাল ম্যানেজার সীতাকান্ত মণ্ডল বলেন, ‘গত বছর মালদায় আমের ফলন কম হয়েছিল। এই বছর আবহাওয়া ভালো রয়েছে। আমের ফলন বেশি হবে আশা করা যাচ্ছে। এখন থেকেই বিদেশে আম রপ্তানির ক্ষেত্রে আমরা উদ্যোগ নেওয়া শুরু করছি।’
কৃষকদের ভালো মানের আম উৎপাদনের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি, বিশ্বের একাধিক দেশের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু হয়েছে।