Malda | ‘ব্যাংকের কিস্তি কীভাবে দেব’, চাকরি হারিয়ে অথৈ জলে দম্পতি

Malda | ‘ব্যাংকের কিস্তি কীভাবে দেব’, চাকরি হারিয়ে অথৈ জলে দম্পতি

আন্তর্জাতিক INTERNATIONAL
Spread the love


গৌতম দাস ও সৌরভ ঘোষ, গাজোল ও মালদা: সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারিয়েছেন বহু শিক্ষক। বেশ কয়েকজন দম্পতিও পড়েছেন অথৈ জলে। সংসার কীভাবে চলবে, জানেন না। তাদের মতো অসহায় উদ্বেগে দিন কাটছে পাঁচু বিশ্বাস ও তাঁর স্ত্রী অঞ্জনা সরকারের। একই অবস্থা সুমন চক্রবর্তী ও পিয়ালী শেঠ-এর। পাঁচু বিশ্বাসদের বাড়ি ইটাহার থানার শান্তিপুরে। দ্বিতীয় দম্পতির বাড়ি শহরের রামকৃষ্ণপল্লিতে। পাঁচু বিশ্বাস আপাতত ঔরঙ্গাবাদে রয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘২০১৬-তে এসএসসি দেওয়ার পর ২০১৯ সালে ঔরঙ্গাবাদ হাইস্কুলে নবম- দশম শ্রেণির অংক শিক্ষক হিসেবে চাকরি পাই। ২০২২ সালে আপার প্রাইমারিতে একবার ইন্টারভিউয়ের ডাক পেয়েছিলাম। কিন্তু দ্বিতীয় বার আমাকে ইন্টারভিউ দিতে দেওয়া হয়নি।’

পাঁচু বিশ্বাসের সঙ্গে অঞ্জনা সরকারের বিয়ে হয় ২০১৮ সালে। অঞ্জনা ২০১৬-তে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন। চাকরি পান ২০১৯-য়ে। উত্তর দিনাজপুরের একটি গার্লস স্কুলে বাংলার শিক্ষিকা হিসেবে চাকরি করছিলেন। তাঁদের দুজনের এক বছর দশ মাসের সন্তান রয়েছে।

পাঁচু আরও বলেন, ‘বেতনের উপর নির্ভর বৃদ্ধ বাবা- মা এবং ভাই। ওই টাকা দিয়ে ভাইকে লেখাপড়া শেখাচ্ছি। স্ত্রীর বেতনের কিছু টাকা দিয়েই মায়ের চিকিৎসা চলে। এখন কি হবে?’

মাস তিনেক আগে ব্যাংক থেকে ২৮ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে গাজোলে একটি বাড়ি কেনেন। প্রতিমাসে লোনের কিস্তি দিতে হয় ২২ হাজার টাকা। বছরে বিমার জন্য দিতে হবে ১ লাখ টাকা। এখন ব্যাংকের কিস্তি দেওয়া তো দূর অস্ত, দুবেলা দুই মুঠো ভাতের সংস্থান কীভাবে করবেন সে কথা ভেবে উঠতে পারছেন না। তবে সুপ্রিম রায়ে একটাই আশার কথা, আগে যে প্রাইমারি স্কুলে চাকরি করছিলেন সেই চাকরিটা হয়তো পেতে পারেন। রায়গঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্ষদ অফিসে যোগাযোগ করেছিলেন দম্পতি। পর্ষদ জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কপি হাতে আসার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

একইভাবে চাকরি যাওয়ায় কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে ইংরেজবাজার শহরের রামকৃষ্ণপল্লির শিক্ষক দম্পতি সুমন চক্রবর্তী ও পিয়ালী শেঠের। থাকেন ভাড়া বাড়িতে। সেখানে এখন নেমে এসেছে নীরব অন্ধকার। হতাশার সুরে তিনি জানান, ২০১১ সালে চাকরি পান সুমন।

পরে বাড়ির কাছাকাছি স্কুলে আসার জন্য ফের পরীক্ষায় বসেন।  সফলও হন। আড়াইডাঙ্গা ডিবিএম উচ্চবিদ্যালয়ে যোগ দেন। স্ত্রী পিয়ালী শেঠ উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ছিলেন। তাঁদের মাসিক আয়ের ওপর ভরসা করেই চলত সংসার,পাশাপাশি শহরের এক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা থেকে প্রায় কুড়ি লক্ষ টাকার ঋণ নিয়ে অগ্রিম  বুকিং করেছিলেন স্বপ্নের ফ্ল্যাট।

সুমন বলেন, ‘যোগ্য হয়েও চাকরি হারালাম, এটা মেনে নেওয়া খুব কঠিন। আমরা পরীক্ষায় পাশ করে, নিয়ম মেনে নিয়োগ পেয়েছিলাম। যোগ্য- অযোগ্য প্রক্রিয়ার বলি শুধু আমরাই কেন? কীভাবে সম্ভব শিক্ষকতার মতো পেশাকে নিয়ে এভাবে কালি দেওয়ার? এটা আমাদের কাছে শুধু অন্যায় নয়, জীবন ধ্বংস হওয়ার মতো ঘটনা।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *