হরিশ্চন্দ্রপুর: কারও বিয়ে হয়ে গিয়েছে এক বছর, কারও বা দু’বছর। কারও সন্তানও রয়েছে। এরাই আবার রূপশ্রী (Rupashree) প্রকল্পের আবেদনকারী। মালদার (Malda) হরিশ্চন্দ্রপুর (Harishchandrapur) ২ নম্বর ব্লকে রূপশ্রী প্রকল্পের আবেদন যাচাই করতে গিয়ে বড়সড়ো দুর্নীতির পর্দা ফাঁস করলেন ব্লক আধিকারিকরা। তিনটি ভুয়ো রূপশ্রী আবেদনকারী হাতেনাতে পাকড়াও করলেন আধিকারিকরা। তাঁদের মধ্যে একজনের অ্যাকাউন্টে ইতিমধ্যে সরকারের এই প্রকল্পের টাকাও ঢুকে গিয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। অভিযোগ, এই ধরনের ভুয়ো আবেদনের পেছনে বড়সড়ো দালালচক্র সক্রিয় রয়েছে। যদিও সেটা মানতে নারাজ প্রশাসনের কর্তারা। ব্লক প্রশাসনের দাবি, যাঁদেরকে ধরা হয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই বিয়ের পর আবেদন করেছিলেন, যেটা এই প্রকল্পের নিয়ম বহির্ভূত।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, মঙ্গলবার দুপুরে হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের যুগ্ম সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সোনাম ওয়াংদি লামা, ব্লক ওয়েলফেয়ার অফিসার বাসুদেব পাল এবং রূপশ্রী প্রকল্পের ডিইও অষ্টমী ঘোষ দৌলতপুর ইসলামপুর ভালুকা অঞ্চল সহ একাধিক অঞ্চলে পরিদর্শন করেন। ওই সমস্ত এলাকা থেকে আসা রূপশ্রী প্রকল্পের আবেদনগুলি বাড়ি বাড়ি গিয়ে খতিয়ে দেখেন। আর এই খতিয়ে দেখতে গিয়ে কেঁচো খুঁড়তে বেরিয়ে আসে কেউটে। ভালুকা অঞ্চলের জগন্নাথপুর গ্রামে দু’জন এবং হাতি ছাপা গ্রামে একজন ভুয়ো আবেদনকারীকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন তাঁরা। কাগজপত্র খতিয়ে দেখে জানা যায়, তাঁরা ইতিমধ্যেই বিবাহিত। অবিলম্বে আধিকারিকরা সিদ্ধান্ত নেন এই তিনজনের আবেদনপত্র খারিজ করা হবে এবং ব্লক প্রশাসনকে এ বিষয়ে রিপোর্ট দেওয়া হবে। ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকদের জেরার মুখে পড়ে ভুয়ো আবেদনকারীর পরিবারের লোকেরা স্বীকার করে নেন, তাঁদের মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। কারও বা সন্তানও রয়েছে।
কয়েক মাস আগে এই জগন্নাথপুর এলাকা থেকেই বেশকিছু ভুয়ো রূপশ্রী আবেদনকারী আবেদন বাতিল করেন ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা। এ প্রসঙ্গে যুগ্ম সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সোনাম ওয়াংদি লামা বলেন, ‘এলাকায় গিয়ে তিনজন আবেদনকারীর আবেদনপত্র দেখে সন্দেহ হয়। তারপরই তদন্তে উঠে আসে এই আবেদনগুলি বিয়ের পর করা হয়েছে। আমরা তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আবেদনপত্রগুলি বাতিল করা হয়েছে।’