হরষিত সিংহ, মালদা: ‘গণেশ দাদা পেটটি নাদা’ মহারাষ্ট্রবাসী গণেশপুজোয় পৃথিবী ছাপিয়ে গেলেও বাঙালির মতো এত আদর করে কি আর ডাকতে পারে? তাই সর্বজনীন ‘বাপ্পা’ বিগত কয়েক বছর ধরে বাঙালিকেও আপন করে নিচ্ছেন ভাদ্র মাসের শুক্লা চতুর্থীতে। আর যে বাঙালির জীবনের অন্যতম সম্পদ ‘বারো মাসে তেরো পার্বণ’, তারা তো লুফে নেবেই গণেশবন্দনার সুযোগকে। সেই আয়োজনে শহর মালদাই বা পিছিয়ে থাকে কেন? গণেশ চতুর্থীর আগেই উৎসবের আমেজ এবার মালদায়। শহরের একাধিক রাস্তার মোড়ে গণেশপুজোর মণ্ডপ। ঠিক যেন মুম্বই শহর। সেজে উঠেছে শহরের বিভিন্ন প্রান্ত। তবে মালদা শহরের অধিকাংশ পুজো এখনও শৈশব পেরোয়নি। কোনও পুজোর বয়স ৯, কোনও পুজো আবার শুরু হয়েছে ২ বা ৩ বছর হবে।
মালদা শহরের (Malda) মকদমপুর এলাকায় দুটি বড় পুজো হয়, বিমল দাস মোড় গণেশপুজো কমিটির ও মকদমপুর ক্লাবের পুজো। দুটি পুজোই জাঁকজমকপূর্ণ। ২০১৬ সাল থেকে বিমল দাস মোড় গণেশপুজো কমিটির পুজো হয়ে আসছে। এবারে তারা ৯ বছরে পা দিল। বেশ বড় আকারের গণেশমূর্তি তৈরি হয়েছে এখানে। মূর্তির পোশাকে রয়েছে বাঙালিয়ানা। পুজো কমিটির সদস্য সঞ্জয় সাহা বলেন, ‘শুরুতে আমরা এই এলাকার বেশ কয়েকজন মিলে পুজোর সূচনা করি। এখন অনেকেই আমাদের এই পুজোয় শামিল হয়েছেন। পুজো উপলক্ষ্যে বিভিন্ন অনুষ্ঠানও হয়।’
এই পুজোয় এগিয়ে এসেছেন মহিলারাও। মকদমপুর ক্লাবের পুজো এবার ৬ বছরে পড়েছে। কালীপুজো করে থাকে এই ক্লাব। এখন গণেশপুজোতেও পিছিয়ে থাকে না আড়ম্বড়ের দিক থেকে। গণেশ চতুর্থীর পরের দিন এক কেজি ওজনের লাড্ডু দেওয়া হয় গণেশকে। এই ক্লাবের বৈশিষ্ট্য এটাই। এছাড়া রথবাড়িতে কলেজ মাঠের সামনে ৩ বছর ধরে পুজো হয়ে আসছে। উদ্যোক্তা বিনায়ক সংঘ। স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা এই পুজোর সূচনা করেন। পুজো উপলক্ষ্যে ৩ দিনব্যাপী বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বস্ত্র বিতরণের আয়োজন করা হয়।
মালদা শহরের রামকৃষ্ণপল্লি সংলগ্ন জাতীয় সড়কের পাশে, সুকান্ত মোড় ছাড়াও অনেক জায়গাতেই গত কয়েকবছর ধরে গণেশপুজোর আয়োজন হয়ে আসছে। আগামী ৩ দিন গণেশপুজো উপলক্ষ্যে জমজমাট হয়ে থাকবে শহরের আনাচকানাচ। পুজোর একদিন আগে থেকে শহর সেজে উঠেছে। পুজো দেখতে বেরিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা খোকন হালদার বলেন, ‘শহরে গণেশপুজো উপলক্ষ্যে বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়। আমরাও সেই আনন্দ উপভোগ করছি।’