অরিন্দম বাগ, মালদা: আধার কার্ড জানাচ্ছে, বয়স ১৭ বছর ১০ মাস। এরই মধ্যে একই সঙ্গে চার কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছে এক নাবালিকা। চার সদ্যোজাতেরই ওজন অনেক কম। ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাল্যবিবাহ রোধ নিয়ে প্রশাসনের ভূমিকায় প্রশ্ন উঠছে। যদিও জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের দাবি, গত দু-তিন বছরে মালদা (Malda) জেলায় গর্ভবতী নাবালিকাদের সংখ্যা কমেছে প্রায় ৫ শতাংশ।
ওই নাবালিকার বাড়ি মানিকচকের একটি গ্রামে। প্রায় বছর দুয়েক আগে গাজোলের এক পরিযায়ী শ্রমিকের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। শুক্রবার রাতে ওই নাবালিকা মালদা মেডিকেলে চারটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেয়। পরিবার ও মেডিকেল সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন সন্তানের ওজন হয়েছে তেরোশো গ্রামের খানিকটা বেশি। অপর এক কন্যাসন্তানের ওজন ১ কেজি ৫০ গ্রাম। তিন কন্যাসন্তান আপাতত স্বাভাবিক থাকলেও চতুর্থ কন্যাসন্তানকে এখনও অক্সিজেন দিতে হচ্ছে।
ওই নাবালিকার মা জানান, ‘মেয়ে বিয়ের কথা বলছিল। আমাদের ভয় হচ্ছিল, বিয়ে না দিলে মেয়ে পালিয়ে যেতে পারে। সেই ভয়েই আমরা বছর দুয়েক আগে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলাম। শুক্রবার গভীর রাতে মেয়ে চারটে কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছে। চার সন্তানেরই ওজন খানিকটা কম রয়েছে। এখনও এক বাচ্চাকে অক্সিজেন দিতে হচ্ছে।’
জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ্ত ভাদুড়ির বক্তব্য, ‘বছর দু-তিনেক আগে মালদা জেলায় নাবালিকা গর্ভবতীদের সংখ্যা অনেকটা বেশি ছিল। বাল্যবিবাহ রোধ করতে গিয়ে আমাদের সামাজিক সমস্যার মুখে পড়তে হয়। তা সত্ত্বেও আমরা সেই সংখ্যা অনেকটা কমিয়ে আনতে পেরেছি। আগামীদিনে এই পরিসংখ্যান আরও কমবে।’
অবশ্য ওই নাবালিকার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফের প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসন। যেখানে জেলা প্রশাসনের তরফে বাল্যবিবাহ রোধ নিয়ে এত কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে, তারপরেও কেন বাল্যবিবাহ রোধ করা যাচ্ছে না, এমনই সওয়াল তৈরি হচ্ছে। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে উত্তরবঙ্গ সংবাদে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছিল। পরিসংখ্যান অনুযায়ী সেই বছরের প্রথম ৬ মাসে মালদা জেলার গর্ভবতীদের ২০ শতাংশ নাবালিকা ছিল। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, চলতি বছরে সেই পরিসংখ্যান কমে প্রায় ১৫ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে।