মালদা ও গাজোল: পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত সমাজকর্মী কমলি সোরেনের চোখের ছানি অপারেশনের দায়িত্ব নিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুধু তাই নয়, তাঁর সারা জীবনের চিকিৎসার ভার নিলেন শুভেন্দু। বুধবার এই খবর সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেন উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সম্পাদক অভিষেক মিশ্র।
সম্প্রতি, মালদা মেডিকেলে ছানি অপারেশন করাতে এসে এক নার্সের দুর্ব্যবহারের শিকার হন কমলি সোরেন। তাঁর ছবি সহ নার্সের অপমানজনক মন্তব্যের একটি অডিও সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেন বিজেপির জেলা পরিষদ সদস্য তারাশঙ্কর রায়। যদিও সেই অডিওর সত্যতা যাচাই করেনি উত্তরবঙ্গ সংবাদ। খবর দেখেই অভিষেক মিশ্রকে ফোন করেন শুভেন্দু। তিনি অভিষেককে জানান, ‘গুরুমা’র সমস্ত চিকিৎসার দায়িত্ব নিচ্ছেন তিনি। তাঁর চোখের পরবর্তী অস্ত্রোপচার কলকাতায় গিয়ে করানো হবে। একইসঙ্গে যতদিন তিনি বাঁচবেন, তাঁর চিকিৎসার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিচ্ছেন শুভেন্দু।
যদিও বিষয়টি নিয়ে প্রচার চান না বলে জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর বক্তব্য, ‘আমি প্রচার চাই না। নিজের সাধ্যমতো প্রত্যেকদিন এই ধরনের কাজ করি।’
তবে গুরুমার মন ভালো নয়। এতদিন কারও কাছে কোনও সাহায্য পাননি তিনি। এদিন একরাশ হতাশা ধরা দিল তাঁর কথায়। বললেন, ‘পদ্মশ্রী উপাধি শুধু পেয়েছি। আর্থিক সহযোগিতা পাইনি কারও কাছে। শুধু উপাধি দিয়ে তো আর পেট ভরে না।’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘পদ্মশ্রী উপাধি পাওয়ার পর বিধায়ক, সাংসদ সকলেই এসেছিলেন। এখন কেউ খোঁজ নেয় না।’
সোমবার মালদা মেডিকেলে ছানি অপারেশনের পর মঙ্গলবার নিজের বাড়ি কোটালহাটি গ্রামের আশ্রমে ফিরেছেন গুরুমা। এখনও অভিমান জমে রয়েছে মনে। ফেরার পর তেমনভাবে কেউ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।
বুধবার আশ্রমে গিয়ে দেখা গেল, চোখে কালো চশমা পরে বারান্দায় বসে রয়েছেন। সংসারের কাজকর্ম করছেন তাঁর মা ও মেয়ে। তাঁর দেখাশোনাও করছেন তাঁরাই। কমলি সোরেনের কথায়, ‘চোখ পরীক্ষক অজিত দাস বিনে পয়সায় আমার অপারেশনের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। আমি কৃতজ্ঞ। আপাতত আমার মেয়ে কনকা হেমরম ও মা ফুলোস হেমরম দেখাশুনা করছেন।’
একটু থেমে আবার বললেন, ‘বর্তমানে আশ্রমে চারজন ছাত্র রয়েছে। তাদের বাড়ি ভিক্ষে করে আমাদের খাওয়া-পরার ব্যবস্থা হয়। পানীয় জলের জন্য রয়েছে একটি মাত্র ইঁদারা। বাড়ির বাইরে আলোর ব্যবস্থা নেই। সরকার সাহায্য করলে ভালো হয়। আশ্রমের একমাত্র রাম মন্দির ও হনুমান মন্দির ভেঙে পড়েছে। সেটি সারিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিলে ভালো হয়।’ গাজোল-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান কাজল কুণ্ডুর বক্তব্য, ‘আমরা যতটুকু পারি গুরুমাকে সাহায্য করি।’