অরিন্দম বাগ, মালদা: পুরী-কামাখ্যা এক্সপ্রেসে মাদক পাচারের ছক কষেছিল মালদার (Malda) কালিয়াচকের (Kaliachak) এক তরুণ। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। ওঁত পেতে তাকে ধরে ফেলে জিআরপি। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সোমবার সকালে মাদক পাচারের চেষ্টা রুখে দেয় মালদা টাউন জিআরপি থানার পুলিশ। কালিয়াচকের শাহবাজপুর এলাকার ওই তরুণ জসিমুদ্দিন শেখের (২১) হেপাজত থেকে ৪০৪ গ্রাম ব্রাউন সুগার উদ্ধার করা হয়। জিআরপি আধিকারিকদের দাবি, উদ্ধার হওয়া ব্রাউন সুগার অত্যন্ত উন্নতমানের। এর আনুমানিক বাজার মূল্য ২ কোটি টাকা।
তবে কি ব্রাউন সুগার পাচারের নীল নকশায় বদল আনছে পাচারকারীরা? অন্তত গত কয়েক মাসের মাদক কারবারের তদন্তে এমনটাই গন্ধ পাচ্ছে মালদা টাউন জিআরপি থানার পুলিশ। শুধু জিআরপি থানার পুলিশ নয়, এমন তথ্যের হদিস পেয়েছে ইংরেজবাজার থানার পুলিশও।
জিআরপি থানার আইসি প্রশান্ত রাই বলেন, ‘আজ সকালে আমাদের কাছে খবর আসে মালদা টাউন স্টেশন দিয়ে ব্রাউন সুগার পাচারের সম্ভাবনা রয়েছে। সেই খবরের ভিত্তিতে আমরা ওঁত পেতে থাকি। মালদা টাউন স্টেশনে সন্দেহজনকভাবে এক তরুণকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে তল্লাশি চালানো হয়। ওই তরুণের হেপাজতে থাকা চারটি প্যাকেট থেকে মোট ৪০৪ গ্রাম ব্রাউন সুগার উদ্ধার হয়। প্রাথমিক জেরায় আমরা জানতে পেরেছি, ওই তরুণ কালিয়াচক থেকে কোচবিহারের দিকে ব্রাউন সুগারের প্যাকেটগুলি নিয়ে যাচ্ছিল। মালদা টাউন স্টেশন থেকে পুরী-কামাখ্যা ট্রেন ধরার কথা ছিল ওই তরুণের। ধৃতের বিরুদ্ধে পুরোনো কোনও মামলা রয়েছে কি না, তা আমরা খতিয়ে দেখছি। ধৃতকে আজ সাতদিনের পুলিশি হেপাজতের আবেদন জানিয়ে মালদা জেলা আদালতে পেশ করা হয়েছে।’
জিআরপি থানার আইসি প্রশান্ত রাই আরও বলেন, ‘আগে দেখা যেত উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে এদিকে মাদক নিয়ে আসা হত। তবে এখন পাচারকারীদের মধ্যে নতুন ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে। গত কয়েকটি মাদক উদ্ধারের তদন্তে মালদা থেকে কোচবিহারের দিকে পাচারের কথা আমরা জানতে পেরেছি। গত ৫-৬ মাসে আমরা প্রায় ১৫-১৬ জন কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছি। প্রায় ৭-৮ কোটি টাকার মাদক উদ্ধার হয়েছে।’
জিআরপি থানার অফিসারদের তদন্তে উঠে আসা তথ্য মিলে যাচ্ছে ইংরেজবাজার থানার তদন্তের সঙ্গেও। গত শনিবার ইংরেজবাজার থানার পুলিশ ২ কেজি ৫৪৮ গ্রাম ব্রাউন সুগার উদ্ধার করে। ওই ঘটনায় ধৃত তিনজনের মধ্যে দুজন কালিয়াচকের বাসিন্দা ছিল। ট্রেন ধরে বিহারে মাদক পাচারের পরিকল্পনা ছিল ধৃতদের।