হরিশ্চন্দ্রপুর: মালদার (Malda) হরিশ্চন্দ্রপুরের (Harishchandrapur) ‘মাখনা শিল্পাঞ্চল’ বলে পরিচিত বারদুয়ারি যাওয়ার রাস্তাটি বেহাল। রাস্তার পিচ উঠে গিয়ে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। আর সেই গর্তে বৃষ্টির জল জমে তৈরি হয়েছে মরণফাঁদ। হামেশাই দুর্ঘটনা ঘটছে ওই রাস্তায়। এবার এই রাজ্য সড়কের মরণফাঁদ বন্ধ করতে উদ্যোগী হল হরিশ্চন্দ্রপুর পুলিশ-প্রশাসন। শনিবার সন্ধ্যা থেকে রাস্তা মেরামতির কাজে হাত লাগিয়েছেন হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশকর্মী এবং সিভিক ভলান্টিয়াররা।
হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি মনোজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘ওই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন দুর্ঘটনার খবর পাচ্ছিলাম। তাই দুর্ঘটনা রুখতে উপায় না পেয়ে গর্তগুলো বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছি। শনিবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করা হয়েছে। যাতে যানজট সৃষ্টি না হয়। আশা করছি, বাকি গর্তগুলো বন্ধ করে ফেলতে পারব।’
বারদুয়ারি যাওয়ার এই রাস্তাটি পাঁচ-সাত বছর আগে পাকা করা হয়েছিল। তারপর থেকে রাস্তা ভাঙে, সেটা সারাই করা হয়। তারপর ফের বর্ষার সময় পরিস্থিতি যে-কে-সেই! রাস্তার গর্তে জল জমে প্রায়ই সেখানে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে, প্রাণহানিও হচ্ছে। সেসব রুখতে এবার পুলিশ নিজেদের খরচে ইটের টুকরো দিয়ে রাস্তার গর্তগুলো ভরাট করে। এই কাজের জন্য বাইরে থেকে মজদুর আনা হয়নি। পুলিশকর্মী এবং সিভিক ভলান্টিয়াররাই কোদাল-বেলচা হাতে রাস্তা সারাইয়ের কাজে নেমে পড়েছিলেন। পুলিশকর্মীর হাতে বরাবর লাঠি-বন্দুক দেখতে অভ্যস্ত স্থানীয়রা, তাঁদের এই রূপ দেখে অবাক হয়ে যান। স্থানীয় বাসিন্দা অজিত সাহা বললেন, ‘পুলিশের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। কিন্তু ওই এলাকায় রাস্তার ধারে মাখনা তৈরি করতে জ্বালানি কাঠ জমিয়ে রাখা হচ্ছে। এতে রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে। আশা করছি, পুলিশ সেদিকে নজর দেবে।’ চাঁচল মহকুমা পূর্ত দপ্তরের সহকারী বাস্তুকার সুজয় সমাদ্দারও ওই রাস্তার কাজ অবিলম্বে শুরু হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারীদের ভোগান্তি কিছুটা কমলেও হরিশ্চন্দ্রপুর চাঁচল ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে রাড়িয়াল এলাকার বাসিন্দাদের সেই ‘সৌভাগ্য’ হয়নি। আজও জাতীয় সড়কের মাঝে দাঁড়িয়ে রয়েছে একটি দোতলা বাড়ি। জাতীয় সড়কের অন্যান্য অংশের কাজ শেষ হয়ে গেলেও এখনও বাড়িটির জন্য কাজ আটকে রয়েছে। কাজ না হওয়ায় রাস্তাটি ভেঙে তৈরি হয়েছে বড় গর্ত। সেই গর্তের পাশ দিয়ে কোনওরকমে যাতায়াত করছেন এলাকাবাসী। একপ্রকার প্রাণ হাতে করে চলাচল করতে হচ্ছে সবাইকে। একাধিকবার বাড়ি ভাঙার নোটিশ দেওয়া হলেও তা করা হচ্ছে না কেন, বা কবে ভাঙা হবে, সে নিয়ে সদুত্তর দিতে পারছে না জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ।
মালদা ন্যাশনাল হাইওয়ে ডিভিশনের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার দিগন্ত কুণ্ডুর কথায়, ‘ওই অংশের বাড়িটি অধিগ্রহণ নিয়ে যে সমস্যা ছিল, সেটা সমাধান হয়েছে। অবিলম্বে ওই এলাকায় জাতীয় সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে যাবে।’