অরিন্দম বাগ, মালদা: অনুপ্রবেশের অভিযোগ ছিলই। সঙ্গে ছিল স্বাস্থ্য দপ্তরের চোখে ধুলো দিয়ে জন্ম কিংবা মৃত্যুর ভুয়ো শংসাপত্র ইস্যু করার অভিযোগও। কিন্তু অভিযোগ থাকলেও সমস্যা সমাধানের উপায় বের হচ্ছিল না৷ অবশেষে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন পদ্ধতি অনুসরণ করে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চাইছে স্বাস্থ্য দপ্তর। সিদ্ধান্ত হয়েছে, এখন থেকে আর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের অনুমোদন ছাড়া জন্ম ও মৃত্যুর কোনও শংসাপত্রের রেজিস্ট্রেশন হবে না।
মালদা জেলাজুড়ে জন্ম বা মৃত্যুর শংসাপত্র ইস্যু করা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অভিযোগ এসেছে। সম্প্রতি চাঁচলের এক মহিলার অস্বাভাবিক মৃত্যু হওয়ার পর পুলিশকে না জানিয়ে মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে একটি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। সেই খবর পেয়ে রীতিমতো ঝামেলা করে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ। শুধু মৃত্যুর শংসাপত্র নয়, টাকা দিয়ে বাচ্চা কিনে বাড়িতে জন্ম হওয়ার কথা বলেও ভুয়ো রেজিস্ট্রেশন করানোর অভিযোগ রয়েছে জেলায়। এভাবে ভুয়ো রেজিস্ট্রেশন বন্ধ করতে জন্মমৃত্যুর তথ্য পোর্টালে নতুন স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতি এনেছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। সেই নির্দেশিকা অনুযায়ী নতুন এসওপি-তে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশনের প্রথম পর্যায়ে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানদের সাব-রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সব ক্ষেত্রেই পঞ্চায়েত প্রধানদের পর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সব কিছু যাচাই করে রেজিস্ট্রেশনের অনুমতি দেবেন।
মালদা জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ্ত ভাদুড়ি বলেন, ‘সারা রাজ্যেই এই নতুন নির্দেশিকা জারি রয়েছে। জেলার রেজিস্ট্রার হিসেবে জেলা শাসক মালদা জেলার জন্য এই নির্দেশিকা জারি করেছেন। জন্ম কিংবা মৃত্যুর সার্টিফিকেটের রেজিস্ট্রেশনের জন্য নতুন এসওপি-তে পঞ্চায়েত প্রধানের পরবর্তী পর্যায়ে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বিষয়টি যাচাই করবেন। এতে অনেকটাই স্বচ্ছতা আসবে।’
এনিয়ে বিজেপির দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘মালদা সীমান্ত লাগোয়া জেলা। এই জেলায় প্রায় ১২ লক্ষ অনুপ্রবেশকারী রয়েছে। যারা বেআইনিভাবে অনুপ্রবেশ করছে, তারা সঙ্গে কোনও বাচ্চা নিয়ে এলে তারও জন্মের প্রমাণপত্র প্রয়োজন। তখন এভাবেই গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানদের একাংশের মাধ্যমে সার্টিফিকেট ইস্যু হয়ে যাচ্ছে। জন্ম কিংবা মৃত্যুর সার্টিফিকেট ইস্যু করতে যদি প্রশাসনিক আধিকারিকের অনুমোদন প্রয়োজন হয়, তবে জালিয়াতি অনেকটা কমে যাবে বলে মনে করছি।’