হরষিত সিংহ, মালদা: দীর্ঘদিন ধরে জলকষ্টে কাজিগ্রাম পঞ্চায়েতের জ্ঞানপাড়া, সদানন্দপুর সহ আশপাশের কয়েকটি গ্রাম। গ্রামে গ্রামে ট্যাপকল রয়েছে ঠিকই তবে জল কই? মাঝেমধ্যে জল এলেও তা পানের অযোগ্য। বাধ্য হয়ে তখন ছুটতে হয় অন্য এলাকায়। গত পাঁচ বছর ধরে এভাবেই চলছে বলে অভিযোগ। এতে তিতিবিরক্ত বাসিন্দারা। এদিকে, তাঁদের অভিযোগ, সমস্যা সমাধানে ব্লক প্রশাসন থেকে শুরু করে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তরে একাধিকবার লিখিত আবেদন জানানো হলেও কোনও কাজ হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা প্রভাস মণ্ডলের কথায়, ‘প্রায় পাঁচ বছর ধরে পানীয় জলের সমস্যা। আয়রনমুক্ত জল পাচ্ছি না আমরা। এদিক-ওদিক থেকে জল সংগ্রহ করতে হচ্ছে। এভাবে আর কতদিন চলবে?’
এলাকায় পরিস্রুত পানীয় জলের সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন মালদা জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি এটিএম রফিকুল হোসেন। তিনি বলেন, ‘ওই এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। মানিকচক ব্লকে একটি বড় পানীয় জলের প্ল্যান্ট তৈরি করা হচ্ছে। সেটির কাজ দ্রুত সম্পন্ন হবে। চালু হলেই পরিস্রুত পানীয় জল পরিষেবা মালদার (Malda) মানিকচক (Manikchak), ইংরেজবাজার (English Bazar) ব্লকজুড়ে দেওয়া হবে। আশা করছি শীঘ্রই কাজ শেষ হবে।’
দৌলতপুর এলাকায় পানীয় জলাধার থেকে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তরের তরফে ওই গ্রামগুলিতে পরিস্রুত পানীয় জলের পরিষেবা দেওয়া হত। এর জন্য ট্যাপকল বসানো হয়। নিয়মিত জলও মিলছিল। তবে সমস্যা শুরু হয় পাঁচ বছর আগে। জল পরিশোধনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আয়রনযুক্ত জল মিলছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, কখনো-কখনো দুই-তিনদিন পরও জল মেলে। তখন জল কিনে পান করতে হয়। আর যাঁদের কিনে পান করার সামর্থ্য নেই, তাঁদের বাধ্য হয়ে টিউবওয়েলের আয়রনযুক্ত জলই পান করতে হচ্ছে। এতে পেটের নানা রোগও দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন গ্রামের বাসিন্দা সুভাষ মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমাদের এই সমস্যা। প্রশাসনকে জানিয়েও সমস্যার সমাধান হয়নি। বর্তমানে এলাকার বাসিন্দারা সাতটারি গ্রাম থেকে জল সংগ্রহ করেন। তবে গরমে প্রচুর জলের প্রয়োজন। এত জল বয়ে আনা সম্ভব নয়। আর এত দূরে গিয়ে জল আনতে সময়ও লাগে প্রচুর।’