Malbazar | মালবাজারের দুই স্কুলে লাগামছাড়া ফি, প্রাথমিকে ভর্তি করতে মাথায় হাত

Malbazar | মালবাজারের দুই স্কুলে লাগামছাড়া ফি, প্রাথমিকে ভর্তি করতে মাথায় হাত

ব্যবসা-বাণিজ্যের /BUSINESS
Spread the love


অভিষেক ঘোষ, মালবাজার: অন্যান্য সরকারি প্রাথমিক স্কুলে বিনামূল্যে পড়াশোনা হলেও সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমী মাল শহরের দুই সরকারি প্রাথমিক স্কুল। সেখানে সরকারি নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নেওয়া হচ্ছে বার্ষিক ফি। সেটাও আবার মাত্রাছাড়া। হিন্দিমাধ্যমের এই সরকারি প্রাথমিক স্কুলের ওপর নির্ভরশীল মাল শহর (Malbazar) তথা পার্শ্ববর্তী চা বাগানের ছেলেমেয়েরা। যদিও জলপাইগুড়ি জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিদর্শক শ্যামল রায় বলেন, ‘এমন কোনও অভিযোগ এখনও আসেনি। তবুও সংশ্লিষ্ট ব্লকের এসআইকে বলব বিষয়টি খতিয়ে দেখতে।’

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষা দপ্তরের নির্দেশিকা অনুযায়ী, সরকার অনুমোদিত কোনও প্রাথমিক স্কুল খরচ বাবদ পড়ুয়াদের থেকে কোনও ফি নিতে পারে না। এমনকি নতুন ভর্তির সময়েও সেই ফি নেওয়া সম্পূর্ণ বেআইনি। তবে সরকারি নির্দেশকে তোয়াক্কা না করে ছাত্রদের থেকে বার্ষিক ফি বাবদ নেওয়া হচ্ছে ১৩০০ টাকা। সেই নির্দেশ স্কুলের নোটিশ বোর্ডে লাগিয়েছে বিএল মিশন প্রাথমিক স্কুল কর্তৃপক্ষ। সেই নির্দেশিকায় আছে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অশোক লাকড়ার স্বাক্ষরও। তাঁর কথায়, ‘স্কুলে কোনও স্থায়ী শিক্ষক নেই। ঊর্ধ্বতন মহলে অনেকবার বলা হলেও কোনও শিক্ষক পাঠায়নি। সেজন্যই স্কুল সচল রাখতে কিছু ফি নিতে হয়।’

ওই স্কুলে ১৪০ জন ছাত্র পড়াশোনা করছে। মধ্যাহ্নভোজন, ইউনিফর্ম সহ অন্যান্য সুযোগসুবিধা বিনামূল্যে দেওয়া হয় পড়ুয়াদের। তবে স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি সব প্রকল্পে ছাত্ররা লাভবান হলেও স্কুলে নেই কোনও স্থায়ী শিক্ষক। ভারপ্রাপ্ত ওই শিক্ষকও অস্থায়ী। স্কুলের ম্যানেজমেন্ট কমিটির তরফে তঁাকে নিয়োগ করা হয়েছে। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে এমনই অবস্থা স্কুলটির। এ ব্যাপারে স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি ফাদার অসওয়াল্ড খালকো বলেন, ‘আমি নতুন এসেছি। শিক্ষক সংকটের বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানাব।’‌

অন্যদিকে, পুষ্পিকা বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক অভিভাবক গিয়েছিলেন তাঁর মেয়েকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে ভর্তির বিষয়ে কথাবার্তা বলতে। স্কুলের প্রাথমিক বিভাগে গিয়ে তিনি ভর্তির প্রক্রিয়া জানতে চান। সে সময়ে স্কুলের এক শিক্ষিকা জানান, অন্য স্কুল থেকে এসে ভর্তি হলে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট সহ অন্যান্য নথিপত্র প্রয়োজন। সেইসঙ্গে বার্ষিক ফি ও ভর্তির ফি’র কথা জানতে পেরে মাথায় হাত সেই অভিভাবকের। ভর্তি ও বার্ষিক ফি বাবদ মোট ২৩০০ টাকা দাবি করা হয়েছে।

ওই স্কুলেরই তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীর অভিভাবকের কথায়, ‌ সরকারের নির্দেশমতো বিনামূল্যে পড়াশোনা হয় না এখানে। ক্লাস বিশেষে বার্ষিক ফি বাবদ ১০০০-১৩০০ টাকা নেওয়া হয়। নতুন ভর্তির সময় সেটাই হয় ২৩০০ টাকার কাছাকাছি। যদিও এই বিষয়ে লিখিত কোনও নির্দেশিকা স্কুলে দেখা যায়নি। এ ব্যাপারে জানতে ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা জুলিয়ানা টোপ্পোর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন তোলেননি।

যদিও সূত্রের খবর, পুষ্পিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো স্থায়ী প্রধান শিক্ষিকা নেই। নেই কোনও স্থায়ী সহকারী শিক্ষিকা। এই স্কুলেও সরকারের তরফে সব সুযোগসুবিধা দেওয়া হয়। তবে টেট উত্তীর্ণ শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় প্রশ্ন উঠছে স্থানীয় মহলে। এ ব্যাপারে এবিটিএ’র তরফে তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,প্রাথমিক শিক্ষা সম্পূর্ণ অবৈতনিক। সেক্ষেত্রে নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি এই ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে না।’

বিজেপির মাল টাউন সভাপতি তথা প্রাথমিক শিক্ষক নবীন সাহার বক্তব্য, ‘গ্রামের স্কুলে যদি বিনামূল্যে সব পড়াশোনা হতে পারে তাহলে এই দুই স্কুলে কেন হবে না? কেন প্রশাসন সব দেখেও পদক্ষেপ করছে না?



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *