Malbazar | পর্যটন আবাস এখন সাপের আস্তানা

Malbazar | পর্যটন আবাস এখন সাপের আস্তানা

আন্তর্জাতিক INTERNATIONAL
Spread the love


সুশান্ত ঘোষ, মালবাজার: এক সময় রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে মাল শহরের পর্যটন আবাস ‘বনলক্ষ্মী’র গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। ২০১৬ সালের আগে পর্যন্ত পশ্চিম ডুয়ার্সে এসে বনলক্ষ্মী আবাসের উপরেই ভরসা রাখতেন পর্যটকরা। কিন্তু ধীরে ধীরে সেই পর্যটন আবাস পর্যটকদের থাকার অনুপযোগী হয়ে যায়। কাঠের দোতলা ভবন, এমনকি কংক্রিটের ভবনটিও বর্তমানে জরাজীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে। পর্যটন আবাসের সংস্কার সম্পূর্ণ হওয়া দূরের কথা, প্রায় ৬ বছর ধরে সমীক্ষার কাজই করে উঠতে পারেনি পর্যটন দপ্তর। সে কথা মেনে নিয়েছেন উত্তরবঙ্গের পর্যটন দপ্তরের ডেপুটি ডাইরেক্টর জ্যোতি ঘোষ। তাঁর স্বীকারোক্তি, ‘পুরাতন কাঠের দোতলা ভবন ও কংক্রিটের ভবন দুটির সার্ভের কাজ চলছে। একটু সময় লাগবে পূর্ণাঙ্গ রূপ পেতে।’ ভগ্নপ্রায় পর্যটন আবাসের সংস্কার কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালে। তবে ২০২৫-এ পৌঁছেও সেই কাজ শেষ হয়নি। ফলে পর্যটকরা মালবাজার (Malbazar) থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ।

রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পর্যটন আবাসের কাঠের দোতলা বাড়ি ও রাত্রিবাসের পাকা ভবনটি আস্তে আস্তে সাপ, পোকামাকড়ের আস্তানায় পরিণত হয়। ছাদ, দেওয়ালের অংশ ভেঙে পড়তে শুরু করে। অভিযোগ পেয়ে তৎকালীন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব নিজে ভবনটি পর্যবেক্ষণ করেন। তারপরই তিনি ঘোষণা করেন, পুরোনো ভবনের জায়গায় আধুনিক ভবন তৈরি করা হবে। পাশাপাশি ম্যারেজ হল সহ বেশ কিছু নতুন সুবিধাও পাওয়া যাবে ‘বনলক্ষ্মী’তে। সেই মতো ২০১৯-এর শেষের দিকে কাজ শুরু হয়। কিন্তু এতদিনে শুধুমাত্র রেস্টুরেন্ট, বার ও একটি ডর্মিটরি তৈরি করা গিয়েছে। রেস্টুরেন্ট ও বার চালু হলেও লজিং অর্থাৎ পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা চালু করা যায়নি। এমনকি ডর্মিটরিটি তৈরি হলেও চালু করা যায়নি। কারণ এখনও বেশ কিছু কাজ বাকি রয়েছে। পর্যটকদের অভিযোগ, রেস্টুরেন্ট চালু থাকলেও সেখানে মাঝেমধ্যেই জলের মেশিন খারাপ হয়ে যায়। ফলে টয়লেট, ল্যাট্রিনে জলের সমস্যা দেখা দেয়। ফলে বনলক্ষ্মী আবাসের উপর ভরসা রাখতে না পেরে বহু পর্যটক এখন মাল শহরে না এসে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন।

কলকাতা থেকে ডুয়ার্সে ঘুরতে এসেছিলেন প্রবীর বাগচী নামে এক পর্যটক। তাঁর কথায়, ‘বহুবার ডুয়ার্সে গিয়েছি। গরুমারা ঘুরতে গেলে আমাদের থাকার নিশ্চিত স্থান ছিল বনলক্ষ্মী। বনলক্ষ্মীর আতিথেয়তা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্য আজও ভুলতে পারিনি। তবে সেখানে এখন আর থাকতে পারছি না। এর দ্রুত সংস্কার হলে অবশ্যই মালের পর্যটন ব্যবসা আবার উন্নতির মুখ দেখবে।’ প্রবীরের সঙ্গে ঘুরতে আসা দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় নামে আরেক পর্যটকের মুখেও একই কথা শোনা গেল।

শহরের পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত পঙ্কজ সিংঘলের বক্তব্য, ‘মেটেলির সিনক্লেয়ার্সের সমান গুরুত্বপূর্ণ ছিল বনলক্ষ্মী।’ চন্দন দাস নামে আরেক পর্যটন ব্যবসায়ী বলেন, ‘এখানে সিনেমার শুটিংয়ের জন্য জয়া বচ্চন, অভিষেক বচ্চনরাও এসেছিলেন। পিকে ব্যানার্জি থেকে শুরু করে বাইচুং ভুটিয়া কে না এসেছিলেন বনলক্ষ্মীতে। অথচ বনলক্ষ্মীর এখন কী অবস্থাই না হয়েছে?’ বিষয়টি নিয়ে উত্তরবঙ্গের পর্যটন দপ্তরের ডেপুটি ডাইরেক্টর জ্যোতি ঘোষের বক্তব্য, ‘আপাতত রেস্টুরেন্ট, বার, কনফারেন্স হল ও ডর্মিটরি রুমের কাজ শেষ হয়েছে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *