সুশান্ত ঘোষ, মালবাজার: গত বছর ডিসেম্বরে মাল পুরসভার উদ্যোগে বাড়ি বাড়ি পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছানোর তৎপরতা দেখা গিয়েছিল। কিন্তু এখনও সব ওয়ার্ডে পরিষেবার কাজ করতে ব্যর্থ পুরসভা বলে অভিযোগ। কাজের গতি খুবই ধীর। ফলে ফেব্রুয়ারির শুরুতেই মাল শহরে জলসংকট দেখা দিয়েছে। কত তাড়াতাড়ি জলের সমস্যা সমাধান করতে পারে পুরসভা সেদিকেই নজর সাধারণ মানুষ থেকে বিরোধীদের।
এ বিষয়ে মাল পুরসভার চেয়ারম্যান উৎপল ভাদুড়ি বলেন, ‘এর আগে আম্রুত-১ প্রকল্পে আমরা মোটামুটি হাজার বাড়িতে জলের সংযোগ পৌঁছে দিয়েছি। এখনও যতটুকু কানেকশন বাকি আছে প্রকল্প-২’তে সেগুলো আমরা সম্পূর্ণ করব।’ প্রথম প্রোজেক্টে ৪৪ কোটি অর্থবরাদ্দ হয়েছিল বলে তিনি জানান।
মাল শহরে পরিস্রুত পানীয় জলের সমস্যা বহুদিনের। বিভিন্ন মহল থেকে জল নিয়ে যেমন পুরসভার কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে, তেমনই সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানের জন্য দাবিও উঠেছে।
শেষমেশ আম্রুত প্রকল্পের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছাতে উদ্যোগী হয়েছিল পুরসভা।
প্রথম ধাপের কাজে মাল শহরের প্রায় হাজার বাড়িতে মিটার এবং পাইপলাইন পৌঁছায়। কিন্তু মাঝে পুরসভার অস্থিরতার কারণে কাজটির গতি ধীর হয়ে যায়। তারপর গত বছর ডিসেম্বর মাসে জোরকদমে কাজ শুরু হলেও এখনও সব ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা করে উঠতে পারেনি পুরসভা। তার ওপর কিছু ওয়ার্ডের মিটার চুরি যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মিঠু মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘পানীয় জল নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। মাল শহরে জলের সংকট তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব প্রকল্পটি সম্পূর্ণ করার জন্য পুরসভাকে অনুরোধ করব।’
এদিকে, আম্রুত প্রকল্পের পাশাপাশি মাল শহরের পম্পা হলের পাশেই একটি রিজার্ভার তৈরি হয়েছে। সেই রিজার্ভারের জন্য জলের স্তর নিয়ে সমস্যা হয়েছিল। সে বিষয়ে চেয়ারম্যান বলেন, ‘একবার বোরিং করে লেয়ার পাওয়া যায়নি। দ্বিতীয়বার চেষ্টা করা হচ্ছে। পেয়ে গেলেই ওটার কাজ দ্রুত সম্পন্ন হবে।’
আম্রুত প্রকল্পের কাজে দেরি হওয়ায় কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিরোধীরা। মাল টাউন বিজেপির সভাপতি নবীন সাহার কথায়, ‘পুরসভার অপরিকল্পিত পরিকল্পনার দরুন আম্রুত প্রকল্পের কাজে দেরি হচ্ছে। বেশিরভাগ ওয়ার্ডেই মিটার বসেনি। কিছু ওয়ার্ডের মিটার চুরি হয়েছে। আমি প্রশাসনকে অনুরোধ করব, প্রথম ধাপের কাজের সঠিক যাচাই করেই পরবর্তী কাজের টাকা অনুমোদন করা উচিত।’
সিপিএমের মাল এরিয়া কমিটির সম্পাদক রাজা দত্ত বললেন, ‘বিগত বোর্ডের আমলে জলের সমস্যা সমাধানের কোনও চিন্তাই ছিল না। মডেল শহর হিসেবে ঘোষণা করার পরেও ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে জলের ট্যাংক দিয়ে জল দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল, যেটা এখন গ্রামেও হয় না। এতদিন আগে টাকা এসেছিল, এখনও পর্যন্ত সম্পূর্ণ হয়নি কেন? আমরা চাই প্রকৃত সমাধান।
সবমিলিয়ে নতুন পুর বোর্ডের কাছে জলসমস্যা সমাধান বড় চ্যালেঞ্জ বলেই মনে করছেন বাসিন্দারা।