অভিরূপ দে, ময়নাগুড়ি: শীতের মরশুমে ময়নাগুড়ি হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন যত সংখ্যায় রোগী আসতেন, আবহাওয়ার পরিবর্তন শুরু হতেই এই বিভাগে জ্বর, সর্দি ও পেটের রোগ নিয়ে চিকিৎসা করাতে আসা রোগীর সংখ্যা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। শুধু ময়নাগুড়ি হাসপাতালই নয়, ময়নাগুড়ি ব্লকের গ্রামীণ এলাকায় থাকা ছয়টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও গত কয়েকদিনে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। শহরে প্রাইভেট চিকিৎসকদের চেম্বারগুলিও পিছিয়ে নেই।
মরশুম বদলের সময়ে ময়নাগুড়ি ব্লকে পেটের অসুখ, ভাইরাল জ্বরের প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলে সরকারি এবং বেসরকারি সব স্তরের চিকিৎসাকেন্দ্রগুলিতে টানা জ্বর, সঙ্গে সর্দিকাশিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। গ্রাম থেকে শহর, সর্বত্র এক অবস্থা। গত কয়েকদিন থেকে দিনের বেলায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সন্ধ্যা নামতেই ফের তাপমাত্রা কমে যাচ্ছে। রাতের দিকে ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। আবহাওয়ার এই খামখেয়ালিপনার জন্য বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বলে চিকিৎসকদের মত। তাঁরা জানাচ্ছেন, জ্বর ও সর্দিকাশিতে আক্রান্তদের বেশিরভাগেরই ‘আপার রেসপিরেটরি ট্র্যাক্ট’, অর্থাৎ নাক, গলা ও শ্বাসনালিতে সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে ‘লোয়ার রেসপিরেটরি ট্র্যাক্ট’, অর্থাৎ ফুসফুসে সংক্রমণ বা নিউমোনিয়ায় আক্রান্তও মিলছে। এছাড়াও পেটের রোগে আক্রান্ত রোগীরা রয়েছেন।
ময়নাগুড়ির ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সীতেশ বর বললেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। প্রতিবছরই এই সময় রোগী সংখ্যা কিছুটা বেড়ে যায়। ঠান্ডার সময়ে মানুষ সেই পরিবেশে অভ্যস্ত হয়ে যায়। শীতের শেষে যখন তাপমাত্রা আস্তে আস্তে বাড়তে শুরু করে তখন অনেক সময়ে আমাদের শরীর তাপমাত্রার এই বৈষম্য নিতে পারে না। শিশু ও বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় তারা সহজে এই পরিবর্তনশীল আবহাওয়ার সঙ্গে নিজেদের খাপ খাওয়াতে পারে না। তাছাড়া, তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রোগজীবাণুও সক্রিয় হয়ে ওঠে।’ ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে বিভিন্ন অসুখের আশঙ্কা বাড়ে বলে তিনি জানান। ময়নাগুড়ির বিশিষ্ট চিকিৎসক চিরঞ্জিত মোহন্ত মনে করিয়ে দিলেন, ‘আবহাওয়া পরিবর্তনের এই সময়ে বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের সাবধানতা অবলম্বন প্রয়োজন।’