উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ বুধবার দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তপ্ত হল দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলা। এদিন সকাল থেকেই শুরু হয় সংঘর্ষ। বেলা বাড়তেই পরিস্থিতি কার্যত রণক্ষেত্রের আকার নেয়। নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় পরিস্থিতি। বিক্ষোভকারীরা দেদারে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুঁড়তে থাকে। ইটের আঘাতে ঘায়েল হন একাধিক পুলিশ কর্মী। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বাইক, ভেঙে দেওয়া হয় পুলিশের গাড়ি। দফায় দফায় পুলিশের উপর হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ।
বিকেলের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে বিরাট পুলিশ বাহিনী। এখনও থমথমে রয়েছে গোটা এলাকা। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৬৩ ধারা জারি করা হয়েছে সেখানে। এদিনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মহেশতলার অশান্তি প্রসঙ্গে পুর ও নগরোয়ন্ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “পুলিশের উপর আক্রমণ হলে আইনে যে প্রভিশন আছে, সেই অনুযায়ী শাস্তি হবে। কাউকে ছাড়া যাবে না। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।” তিনি আরও বলেন, “বাংলা কখনই গুজরাট হবে না। এখানে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ছিলাম, আছি, থাকব। পুলিশ পুলিশের কাজ করবে। আমাদের বাংলায় হিংসার কোনও জায়গা নেই। দুষ্কৃতীরা শান্তি বিঘ্নিত করার চেষ্টা করলে আইন কঠোরভাবে তার প্রতিরোধ করবে। কড়া শাস্তি হবে।”
ইতিমধ্যেই মহেশতলায় পরিস্থিতি নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধিরা। বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে যেতে পারেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। দলীয় বিধায়কদের নিয়ে রাজভবনেও যেতে পারেন শুভেন্দু। শাসকদলের পক্ষে কুণাল ঘোষ বলেন, “পুলিশ-প্রশাসন বিষয়টা দেখছে। এই বিষয়ে কোনও রাজনৈতিক মন্তব্য করব না।”
প্রসঙ্গত, এদিন সকালে আক্রা সন্তোষপুর এলাকায় ফলের দোকান বসানো নিয়ে গন্ডোগোলের সূত্রপাত। পরে তা হাতাহাতির রূপ নেয়। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। এলাকায় শুরু হয় ব্যাপক ভাঙচুর। একাধিক বাড়ির ছাদের উপর থেকে ঢিল ছোঁড়া হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশবাহিনী। এডিজি দক্ষিণবঙ্গ, ডিআইজি প্রেসিডেন্সি রেঞ্জ-সহ পুলিশের শীর্ষকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। উন্মত্ত জনতা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোঁড়ে। শুরু হয় পাথরবৃষ্টি। একটি বাইকেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশের গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয় ব়্যাফ। কাঁদানে গ্যাসও ছোঁড়া হয়। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী জখম হন।