শুভজিৎ দত্ত, নাগরাকাটা: মাধ্যমিকে হতশ্রী দশার (Madhyamik End result 2025) পেছনে ফের কাঠগড়ায় উঠে আসছে চা বলয়ের স্কুলগুলির ফলাফল। হতাশা মেশানো সুরে ডিআই (মাধ্যমিক) বালিকা গোলের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য, ‘আমরা তো চেষ্টা করেই যাচ্ছি।’ জেলা শিক্ষা আধিকারিক (ডিইও) সঞ্জীব দাস বলেন, ‘এমন ফল কারও কাছেই কাঙ্ক্ষিত নয়। পড়ুয়াদের বিকাশের ঘাটতি, গাফিলতি ঠিক কোথায় খুঁজে বের করা আশু প্রয়োজন। শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে।
বিভিন্ন স্কুলের পাশের হারের তথ্য বলছে ডুয়ার্সের চা বলয়ের স্কুলগুলির পারফরমেন্স এবারও শোচনীয়। কোথাও তা ৫০ শতাংশ, আবার এর চাইতেও কম। যেমন বানারহাটের বল্কা পরিমল হাইস্কুল থেকে এবার পরীক্ষা দিয়েছিল ৩৯০ জন। উত্তীর্ণ হয়েছে মোটে ১১৯ জন। সেখানকার আদর্শ বিদ্যামন্দির হাইস্কুল থেকে ২৮৪ জনের মধ্যে পাশ করেছে ১৮৭ জন। চামুর্চি ভারতীয় পাঠশালা থেকে ৩১৭ জনের মধ্যে পাশ করেছে ১৩৮ জন। বানারহাট হাইস্কুলের ৫৯ জনের মধ্যে পাশ করেছে ৪২ জন। মেটেলির রাষ্ট্রভাষা হাইস্কুল থেকে ৩৫৮ জনের মধ্যে বৈতরণি পেরোতে পেরেছে ১১৩ জন। আড়াই হাজার পড়ুয়া সমৃদ্ধ নাগরাকাটা হিন্দি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২৫৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ১৪৩ জন। বহু স্কুলেই ৭৫ শতাংশ নম্বরধারী তো দূরের কথা, নিদেনপক্ষে প্রথম বিভাগও নেই।
বল্কা পরিমল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দ্রশেখর প্রসাদ বলেন, ‘চা বলয়ের অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনতার অভাব অন্যতম অন্তরায়।’ লুকসানের লালবাহাদুর শাস্ত্রী বাংলা-হিন্দি হাইস্কুলের টিআইসি টিকারাম ছেত্রী আবার অন্য প্রশ্ন উসকে দিচ্ছেন। তাঁর কথায়, ‘আমাদের ফল খারাপ, একথা ধ্রুবসত্য। শহরের স্কুলগুলি থেকেও কিন্তু ভালো ফল পাওয়া যাচ্ছে না। সামগ্রিকভাবে সবকিছু ভেবে দেখা দরকার।’ পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সভাপতি অঞ্জন দাস বলেন, ‘হতাশজনক ফল তো বটেই।’ এবিটিএ-র জেলা সম্পাদক প্রসেনজিৎ রায় মনে করেন, ‘এ লজ্জা রাখার কোনও জায়গা নেই। শিক্ষা দপ্তর হাত গুটিয়ে বসে আছে। কবে পদক্ষেপ হবে জানা নেই।’