Lanterns | স্মৃতির কোঠায় লন্ঠন ও কুপির আ

Lanterns | স্মৃতির কোঠায় লন্ঠন ও কুপির আ

ভিডিও/VIDEO
Spread the love


রাহুল দেব, রায়গঞ্জ: ‘হাতে লন্ঠন করে ঠনঠন, জোনাকিরা দেয় আলো’ কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘রানার’ কবিতায় রাতের অন্ধকারে চিঠি বিলি করার জন্য রানারের একমাত্র ভরসা ছিল লন্ঠন। যদিও ডাক ব্যবস্থায় রানারের পর্ব অনেক আগে মিটে গিয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রানারের হাতের লন্ঠনটিকে ভুলতে বসেছেন মানুষ। বর্তমান সময় থেকে দেড় দশক আগে শহর ও গ্রামাঞ্চলের বাড়িগুলিতে লন্ঠনের (Lanterns) দেখা মিলত। কিন্তু এখন গ্রামগঞ্জের হাতেগোনা দু’-একটি বাড়িতে খোঁজ করলে হয়তো বস্তুটির দেখা মিলতে পারে। কিন্তু শহরে সেই জিনিসের দেখা আর মেলে না।

এক সময় সন্ধ্যাবেলা লোডশেডিং হলে প্রত্যেক বাড়ির ভরসা ছিল লন্ঠন। বাড়ির ছেলেমেয়েরা লন্ঠনের আলোয় পড়াশোনা করত। এছাড়া গৃহিণীরা রান্না করতেন লন্ঠনের আলোতে। কিন্তু বর্তমান সময় শহরাঞ্চল তো বটেই এমনকি গ্রামাঞ্চলে লন্ঠনের জায়গা দখল করে নিয়েছে ইনভার্টার এবং বড় চার্জার বাতি।

শহরের স্কুল রোডের এক ব্যবসায়ী পরিতোষ দত্তের কথায়, ‘এই যুগে লন্ঠনের ব্যবহার প্রায় নেই বললেই চলে। কিছু দোকানদার এখনও লন্ঠন রাখে। কিন্তু কেউ প্রায় কেনে না বললেই চলে। কাপড় গরম করে মূলত কোমর ও হাঁটুর ব্যথায় সেক দেওয়ার জন্য এখনও কিছু মানুষ লন্ঠন কেনেন। প্রায় দুইশো টাকা দামে একটি লন্ঠন বিক্রি হয়।’ যদিও এক শহরবাসী বাপ্পাদিত্য দাসের মতে, ‘ব্যথায় গরম সেক দেওয়ার জন্য হট ওয়াটার ব্যাগ ভালো। এখন কেরোসিন তেল প্রায় পাওয়া যায় না। তাছাড়া কেরোসিন তেলের দাম বেশি।’

লন্ঠনের ভেতরে ফিতা লাগিয়ে নীচে তেল ভরার কথা মনে করতে করতে আরেক শহরবাসী শোভন মৈত্র বলেন, ‘ছোটবেলায় মা-ঠাকুমাকে দেখতাম লন্ঠনের মধ্যে কেরোসিন তেল ভরে রাখতেন। কিন্তু সময় যত এগিয়েছে, এসবের ব্যবহার হ্রাস পেয়েছে। প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে এসব জিনিস হয়তো একদিন চিরতরে হারিয়ে যাবে।’

লন্ঠনের মতোই দশা কুপির। অতীতে কেরোসিন তেল ভরে কুপি জ্বালিয়ে সন্ধ্যাবেলায় রাস্তার পাশে চপ, ফুলুরি ভাজা হত। ব্যবসা চালানোর জন্য তাঁদের ভরসা ছিল ওই কুপির আলো। কিন্তু এখন কুপি আর দেখাই যায় না। অমল ঘোষ নামের এক স্টেশনারি বিক্রেতা জানান, আগে তিনি দোকানে কুপি রাখতেন। কয়েক বছর আগে পঞ্চাশ টাকায় একটি কুপি বিক্রি করেছেন। কিন্তু এখন আর কেউ কুপি কেনেন না তাই তিনি আর কুপি রাখেন না।

আগে বাদামওয়ালারা কুপি জ্বালিয়ে বাদাম বিক্রি করতেন। অমিত সাহা নামে এক বাদামওয়ালা বলেন, ‘আগে রাস্তাঘাটে এত আলো ছিল না। তাই কুপি জ্বালিয়ে ঝুড়িতে করে বাদাম বিক্রি করতাম। কিন্তু এখন পথবাতির আলোতে কাজ চলে যায়। তাই কুপি ব্যবহার করি না।’ সময়ের সঙ্গে কুপি বা লন্ঠন হারিয়ে গেলেও এগুলির প্রত্যেকটির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বাঙালির আবেগ।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *