সাজাহান আলি, কুমারগঞ্জ: সোস্যাল মিডিয়ার পাল্লায় পড়ে প্রেম-ভালোবাসার টানে ফের নিরুদ্দেশ নাবালিকা ছাত্রী। পরিবারের অভিযোগ পেয়ে কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ চারদিন পর আবারও উদ্ধার করে আনল একাদশ শ্রেণির ওই নাবালিকাকে। ১৬ বছর বয়সি মেয়েটিকে পুলিশ বীরভূম জেলার পাইকার থানা এলাকার একটি গ্রাম থেকে উদ্ধার করে আনে।
কিন্তু ওই ঘটনায় অভিযুক্ত প্রেমিক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। শুক্রবার সকালে উদ্ধার হওয়া নাবালিকাকে মেডিকেল টেস্টের পর বালুরঘাট সিডব্লিউসিতে পাঠিয়েছে কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ। সেখানে আইনি প্রক্রিয়া মেনে পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়া হবে।
কুমারগঞ্জ ব্লকের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী একটি প্রত্যন্ত গ্রামের একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রী মোবাইলে প্রায়শই ফেসবুকে মগ্ন থাকত। সেইসূত্রে বীরভূম জেলার এক তরুণের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। এরপর গত ১৪ তারিখ বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়ার পর রহস্যজনকভাবে নিরুদ্দেশ হয়ে যায় একাদশ শ্রেণির ছাত্রীটি। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর পরিবারের তরফে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর করে। কোথাও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। নিরুপায় হয়ে পরিবারের তরফে সেদিনই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
এরপর মোবাইল লোকেশন ট্র্যাক করে কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ জানতে পারে, মেয়েটি বীরভূম জেলার একটি গ্রামে এক তরুণের বাড়িতে রয়েছে। তারপর কুমারগঞ্জ থানার পুলিশের একটি দল বীরভূমে গিয়ে সেখানকার পুলিশের সহযোগিতায় নিরুদ্দেশ নাবালিকা ছাত্রীকে উদ্ধার করে কুমারগঞ্জে নিয়ে আসে। ঘটনা প্রসঙ্গে কুমারগঞ্জের এক অভিভাবক বৃন্দাবন দাসের উদ্বেগ, ‘ছাত্রছাত্রীদের কাছে মোবাইল ভালোর চেয়ে খারাপ করছে বেশি। তাই এবিষয়ে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সচেতনতার পাঠ দিলে খুব ভালো হয়। এজন্য বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও গ্রামগঞ্জে ছাত্রছাত্রী সহ সকলের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা একান্ত প্রয়োজন।’
কুমারগঞ্জ থানার আইসি রামপ্রসাদ চাকলাদার বলেন, ‘একের পর এক নাবালিকা ছাত্রী বিভিন্ন জায়গায় হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় পুলিশ উদ্বিগ্ন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের সচেতন করতে পুলিশ তৈরি। এক্ষেত্রে বিভিন্ন স্কুল ও প্রশাসনের অন্য স্তরের সহযোগিতা পেলে খুব ভালো হয়।’
কুমারগঞ্জের বিডিও শ্রীবাস বিশ্বাস ওই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘নাবালিকা মেয়েদের নিরুদ্দেশ ও পাচারের মতো ঘটনা প্রতিরোধ করতে সচেতনতা বৃদ্ধির বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খুব তাড়াতাড়ি ক্রাইম ব্রাঞ্চ, পুলিশ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে পর্যালোচনা করে দেখা হবে এবং যে সমস্ত এলাকায় এই ধরনের ঘটনা ঘটছে সেখানকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পঞ্চায়েতে যত তাড়াতাড়ি সচেতনতা শিবির করা যায়, সেটা ভেবে দেখা হচ্ছে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন এনজিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে।’