কুমারগঞ্জ: দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জ থানার অন্তর্গত জাখিরপুর পঞ্চায়েতের এক মর্মান্তিক ঘটনায় আলোড়ন পড়েছে। বছর পঁচিশের মাহবুবা খাতুন নিজের পছন্দে বিয়ে করেছিলেন রাজস্থানের এক যুবককে গত ডিসেম্বরে। তবে সুখের আশায় গড়া সেই সংসার কিছুদিনের মধ্যেই বাধার মুখে পড়ে মাহবুবার নিজের পরিবারের হাতেই।
গত মার্চ মাসে বাবার অসুস্থতার খবর পেয়ে মাহবুবা ফিরে আসেন তার পৈত্রিক বাড়িতে। কিন্তু সেখানেই শুরু হয় নিপীড়নের নতুন অধ্যায়। মাহবুবার অভিযোগ, তাকে বাড়িতে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয় এবং জোর করে স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাপ সৃষ্টি করা হয়। শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি, তার যৌনাঙ্গে লংকার গুঁড়ো দেওয়ার মতো নৃশংস নির্যাতনের অভিযোগও উঠেছে পরিবারের বিরুদ্ধে। এমনকী প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয় তাঁকে।
অবশেষে, গতকাল রাতে কোনওমতে পালিয়ে পাশের এক গ্রামে আশ্রয় নেন মাহবুবা এবং সেখান থেকে কুমারগঞ্জ থানায় যোগাযোগ করেন। পুলিশ রাতেই তাঁকে উদ্ধার করে এবং আজ তাঁকে আদালতে পেশ করা হয়। আদালতের নির্দেশে মাহবুবা তার স্বামীর কাছে রাজস্থানে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কুমারগঞ্জ থানার আইসি রামপ্রসাদ চাকলাদার।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে মাহবুবা জেলা শাসকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন যেখানে তিনি সমস্ত নির্যাতনের বিবরণ তুলে ধরেছেন। যদিও জেলা শাসকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। আইনি পথে এগিয়ে মাহবুবা নিজের স্বাধীনতার ও নিরাপত্তার লড়াইয়ে যে সাহসিকতা দেখিয়েছেন, তা নিঃসন্দেহে প্রেরণাদায়ক। এখন দেখার, প্রশাসন কতটা দ্রুত ও কার্যকরভাবে তার ন্যায় নিশ্চিত করতে পারে।