কৌশিক দাস, ক্রান্তি: ক্রান্তি ব্লকের (Kranti) দুই বনবস্তিকে মডেল ভিলেজ (Mannequin village) করার উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। ব্লকের রাজাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের মাগুরমারি বনবস্তি এবং মেচবস্তির উন্নয়নের জন্য একাধিক প্রকল্প পাঠানো হয়েছে ঊর্ধ্বতন মহলে। খুব তাড়াতাড়ি সেগুলো বাস্তবায়ন হওয়ার আশায় গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ।
মডেল ভিলেজ তৈরির মাধ্যমে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পর্যটন, পানীয় জল, যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রভূত উন্নতি ঘটানো হবে। পাশাপাশি মাগুরমারিতে থাকা একটি ঝিলকে কেন্দ্র করে নৌকাবিহারের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। ইতিমধ্যে ব্লক এবং জেলা প্রশাসনের একাধিক দল পরিদর্শনে এসেছে।
জলপাইগুড়ি জেলার অন্যতম প্রত্যন্ত এলাকা মাগুরমারি। আপালচাঁদ জঙ্গলঘেঁষা এই এলাকাটিতে বুনোদের অত্যাচার সবচেয়ে বেশি। রয়েছে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পানীয় জল, রাস্তাঘাট, আলো সহ হাজারও সমস্যা। একই অবস্থা তারঘেরা রেঞ্জের মেচবস্তিরও।
ক্রান্তি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পঞ্চানন রায় জানালেন, ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। শুয়োর প্রতিপালন থেকে গবাদি প্রাণী, হাঁস-মুরগি ইত্যাদি গ্রামের বাসিন্দাদের দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এর পাশাপাশি গ্রাম দুটির উন্নয়ন এবং বাসিন্দাদের রোজগারের জন্য একগুচ্ছ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এককথায় গ্রামগুলোর বাসিন্দারা যাতে নিজেরাই স্বনির্ভর হয়ে উঠতে পারেন, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।’ রাজাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মিন্টু রায়ের গলায়ও আশার সুর। তিনি বলেন, ‘পর্যটনের দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে দুই বনবস্তিতে। গ্রামগুলোকে নিয়ে আমাদের ভাবনার কথাও পাঠিয়েছি। ধীরে ধীরে সেগুলো বাস্তবায়ন হওয়ার পথে।’
বিগত কয়েকমাসে ব্লক ও জেলা প্রশাসনের তরফে বেশ কয়েকবার গ্রামগুলো পরিদর্শনে আসা হয়েছে। অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দপ্তরের আধিকারিকরাও মাগুরমারি গ্রাম ঘুরে গিয়েছেন। প্রশাসনের এই উদ্যোগে আশার আলো দেখছে দুই বনবস্তির দুইশোরও বেশি পরিবার। মাগুরমারি গ্রামে থাকা প্রাকৃতিক একটি ঝিলকে কেন্দ্র করে নৌকাবিহারের পরিকল্পনাও রয়েছে। সেই নৌকাবিহারের টানে পর্যটকরা আসবেন। গ্রামের বাসিন্দাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে। এছাড়া, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর মাগুরমারি গ্রামে থাকা সরকারি রিসর্টটিকেও আরও মনোরম করার চেষ্টা চলছে। স্থানীয় বাসিন্দা রবিন ওরাওঁ বলেন, ‘এমন উদ্যোগ নেওয়া হলে আমাদের গ্রামের সকলের জন্য ভালো হবে। সকলে স্বনির্ভর হলে গ্রামের অর্থনীতির উন্নতি ঘটবে।’
মেচবস্তির বাসিন্দা রাজু ওরাওঁ, প্রদীপ শৈবরাও একই কথা জানালেন। রাজুর কথায়, ‘গ্রামে পানীয় জল থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সবকিছুরই ভগ্নদশা। চাষের জমি থাকলেও হাতির ভয়ে সেভাবে চাষ করা যায় না। গ্রামটিকে সাজিয়ে তোলা হলে দারুণ হবে।’