খড়িবাড়ি: পাহাড় ও সমতলে ভারী বৃষ্টির জেরে উত্তাল ভারত-নেপাল সীমান্তের মেচি নদী। এদিন টইটুম্বুর মেচি নদীর জল ঢুকে পড়ে খড়িবাড়ির ডাঙ্গুজোত গ্রামে। যার ফলে জলমগ্ন হয়ে পড়ে তিন শতাধিক বাড়ি। ঘটনার দরুন এলাকায় বাঁধের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন এলাকাবাসীরা।
বিহার ও নেপাল সীমান্তের ডাঙ্গুজোত গ্রাম, দার্জিলিং জেলার একেবারে শেষ প্রান্তে অবস্থিত। পাশেই রয়েছে মেচি নদী। পাহাড় ও সমতলে অত্যাধিক বৃষ্টি হলেই প্লাবিত হয় এই এলাকা। কিন্তু এবারের এই জলস্ফীতি ২০০২, ২০০৯ এবং ২০২১ সালের রেকর্ডও ভেঙে দিয়েছে।
রবিবার সকাল থেকেই মেচি নদী ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। মেচি নদীর জলস্ফীতির জেরে গ্রামে জল ঢোকা শুরু করে। ভারত-নেপাল সীমান্তে মোতায়েন এসএসবির ৪১ নম্বর ব্যাটালিয়নের ডাঙ্গুজোত বিওপিতেও জল ঢুকে যায়। বর্তমানে এসএসবি জওয়ানরা অপেক্ষাকৃত উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন।
মেচি নদীর জলস্তর ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় এলাকায় চরম আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। জলমগ্ন হওয়ায় প্রায় ৩০০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নষ্ট হয়ে গিয়েছে খাদ্যদ্রব্যসহ গৃহস্থালির বিভিন্ন সামগ্রী। বহু গবাদি প্রাণী মারা গিয়েছে। ছোট ছোট শিশুদের নিয়ে নাজেহাল অবস্থা পরিবারগুলির। ঘটনা প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা রামাশীষ মাহাতো তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “বহুবার মেচি নদীর জল এই গ্রাম ঢুকে জলমগ্ন হচ্ছি। মেচি নদীতে বাঁধ না থাকায় এই সমস্যা। বহুবার প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে জানিয়েও কাজ হচ্ছে না। চিড়া-গুড় নয়, আমরা চাই বাঁধ দেওয়া হোক।” দাবিমত নদীতে বাঁধ না দেওয়া হলে, ভোট বয়কটেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন গ্রামবাসীরা।
এদিন ঘটনার খবর পেয়ে ডাঙ্গুজোত গ্রাম পরিদর্শনে যান শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ কিশোরিমোহন সিংহ, বিরোধী দলনেতা অজয় ওঁরাও, খড়িবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রত্না রায় সিংহ প্রমুখ। খড়িবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে জলমগ্ন পরিবারের সদস্যদের শুকনো খাবার, খিচুড়ি ও জল দেওয়া হয়। পরিস্থিতি খারাপ হলে পরিবারগুলোকে দেবীগঞ্জ হাইস্কুলে রাখার ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নিয়েছে খড়িবাড়ি ব্লক প্রশাসন। ঘটনা প্রসঙ্গে কিশোরিমোহন সিংহ বলেন, “শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করা হবে।” ওই এলাকায় বাঁধ নির্মানের ব্যাপারেও সক্রিয় উদ্যোগ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।