উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ যে পোশাকে কলেজের ভিতরে আইনের ছাত্রীর উপর পাশবিক অত্যাচার চালিয়েছিল তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতা মনোজিৎ মিশ্র, সেই পোশাক খুঁজে পেয়েছে অভিযুক্ত নেতার বাড়ি থেকে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে মনোজিতের বাড়ি থেকে সেই পোশাক উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই পোশাকগুলি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে। তদন্তে এই পোশাক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে বলে মনে করছে সিট।
জানা গিয়েছে, কসবা কাণ্ডের তদন্তে রবিবার তিন অভিযুক্তের বাড়িতে গিয়েছিল পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল। অভিযুক্তদের বাড়ি থেকে প্রচুর নমুনা সংগ্রহ করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সিসি ক্যামেরায় যেমনটা দেখা গিয়েছিল, সেই পোশাকই খুঁজে পাওয়া গিয়েছে কসবার কলেজে ধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্তের বাড়িতে। যেগুলি তিনি ঘটনার সময়ে পরে ছিলেন। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে অনুযায়ী মনোজিতের বাড়ি থেকে লাল রঙের কুর্তা এবং খয়েরি রঙের প্যান্ট উদ্ধার হয়েছে। এই প্যান্টে মোট ছ’টি পকেট রয়েছে। এ ছাড়া কালো শর্ট্স। এক অফিসারের কথায়, ‘‘আগে সিসিটিভি ফুটেজে যে পোশাক দেখা গিয়েছিল, বাড়ি থেকে সংগ্রহ করা পোশাকের সঙ্গে তা মিলে গিয়েছে। এগুলি ফরেন্সিক প্রমাণ হিসাবে এই তদন্তে কাজে লাগতে পারে।’’ বাকি দুই অভিযুক্তের বাড়ি থেকেও পোশাক এবং অন্যান্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
এদিকে, কসবা কাণ্ডের তদন্তে ৯ সদস্যের একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে। এই দলে একজন মহিলা পুলিশ অফিসারকে রাখা হয়েছে। নির্যাতিতা তরুণীকে কলেজে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করেছে পুলিশ। সিট তাঁর বয়ানও রেকর্ড করেছে। ঘটনাস্থল থেকে ঘটনার দিন ব্যবহৃত একটি হকি স্টিক পুলিশ উদ্ধার করেছে। সূত্রের খবর, রক্ষীর ঘরে ধস্তাধস্তির প্রমাণ মিলেছে। পাওয়া গিয়েছে ছেঁড়া কিছু চুল। তবে তা কার চুল, এখনও স্পষ্ট নয়। ফরেন্সিক নমুনা হিসাবে এ সবই সংগ্রহ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৫ জুন সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে ক্যাম্পাসের ভিতরে আইনের এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সহ মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সে দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত ১০টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশ সংগ্রহ করেছে। ছাত্রীর অভিযোগ, ইউনিয়ন রুমের ভিতরে প্রথমে তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছিল। পরে নিয়ে যাওয়া হয় রক্ষীর ঘরের ভিতর। সেখানেই ছাত্রীর উপর পাশবিক অত্যাচার চালায় বলে অভিযোগ। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতা ও কলেজের অস্থায়ী কর্মী। নির্যাতিতার পরিবার রবিবার জানিয়েছে, তারা সিবিআই তদন্ত চায় না। তারা কলকাতা পুলিশের তদন্তেই আপাতত আস্থা রাখতে চায়।