উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে সিদ্দারামাইয়াকে। তাঁর জায়গায় এই দায়িত্ব বর্তাতে পারে উপ মুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমারের কাঁধে! কর্নাটকের রাজনৈতিক মহলে এমন সম্ভাবনা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর চর্চা। সম্প্রতি বেঙ্গালুরু গিয়েছিলেন কংগ্রেসের জেনারেল সেক্রেটারি রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা। যা এই সম্ভাবনার আগুনে কার্যত ঘি ঢালার কাজটি করেছে অতি নিপুণভাবে।
তবে এই ‘কুরসি’ বদলের প্রসঙ্গে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেননি বটে, তবে ব্যাপারটি তিনি ছেড়ে দেন হাইকমান্ডের ওপরে। তিনি বলেন, ‘এই বিষয়টি হাইকম্যান্ডের হাতে রয়েছে । এখানে কেউ জানে না হাইকম্যান্ড কী ভাবছে । এটা হাইকম্যান্ডের ব্যাপার । তাঁদেরই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আছে এরপরে কী হবে ।’’
আর এই জায়গাতেই তাঁকে কটাক্ষের নিশানায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন দক্ষিণ বেঙ্গালুরুর বিজেপি সাংসদ তেজস্বী সূর্য। এই প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কার্যত ব্যাঙ্গের সুরে তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেসের হাইকম্যান্ডটা ঠিক কে? ব্যাপারটা যেন ভূতের মতো৷ দেখা যায় না, শোনা যায় না, কিন্তু অস্তিত্ব যে আছে সেটা টের পাওয়া যায়৷ এমনকি সবাই যাকে হাইকম্যান্ড ভাবে, সেই কংগ্রেস সভাপতিও বলছেন, তিনি নাকি হাইকম্যান্ড নন৷’’ এখানে তিনি যে পরোক্ষে গান্ধি পরিবারের নেতৃত্বের দিকে আঙুল তুলেছেন, সেটা বুঝতে কোনও বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন খুব একটা আছে বলে মনে হয় না।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে কর্ণাটকে সরকার গড়ার সময়েই তীব্র মতানৈক্যের সৃষ্টি হয়েছিল সিদ্দারামাইয়া ও শিবকুমারের মধ্যে। মুখ্যমন্ত্রীত্বের দৌড়ে যেমন ছিলেন পার্টির প্রবীণ সদস্য সিদ্দারামাইয়া অপরদিকে কর্ণাটকের মসনদ দখলের প্রতিযোগিতায় পুরোদস্তুর ছিলেন সোনিয়া গান্ধীর ‘কাছের লোক’ হিসাবে পরিচিত শিবকুমার। তবে এই প্রতিযোগিতা থেকে শেষ পর্যন্ত পেছনে সরে আসেন শিবকুমার। শোনা গিয়েছিল, সোনিয়ার কথাতেই নাকি মুখ্যমন্ত্রীত্বের দৌড় থেকে সরে আসেন তিনি। তবে এও শোনা গিয়েছিল যে, এই বিষয়ে নাকি একটি সমঝোতা হয়েছে যে, আড়াই বছর মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলাবেন সিদ্দারামাইয়া আর পরের আড়াই বছর সে দায়িত্ব বর্তাবে শিবকুমারের কাঁধে। যদিও এই বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
গত রবিবার কর্ণাটকের কংগ্রেস বিধায়ক এইচএ ইকবাল হুসেনও দাবি করেছিলেন যে, আগামী ২-৩ মাসের মধ্যে উপমুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমারকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসানো হতে পারে। তবে কি এবার সত্যিই ‘কুরসি’ খোয়াতে চলেছেন সিদ্দারামাইয়া! ‘ভূতুরে’ হাইকমান্ডের অঙ্গুলিহেলনে কি তবে আদতেই শিঁকে ছিড়তে চলেছে শিবকুমারের, সেই প্রশ্নের উত্তর সময় দেবে।