তমালিকা দে, শিলিগুড়ি: আশা জাগিয়ে তৈরি হয়েছিল, রংয়ের প্রলেপও পড়েছিল। সেই রংয়ের ওপর এখন শ্যাওলার আস্তরণ। যাতে স্পষ্ট ঘরগুলি তৈরি হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে। তবে এখনও উদ্বোধন হয়নি। ফলে শুরু হয়নি কেনাবেচাও। পরিকাঠামো তৈরির পরেও কেন কার্যত পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে বেঙ্গল সাফারির গেটের সামনের কর্মতীর্থের স্টলগুলি, শুরু হয়েছে প্রশ্ন ওঠা (Karmatirtha)। সদুত্তর অবশ্য পাওয়া যায় না কোনও মহল থেকেই। বেঙ্গল সাফারিতে বেড়াতে আসা দেশ, বিদেশের পর্যটকরা যাতে উত্তরবঙ্গের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত সদস্যদের তৈরি করা বিভিন্ন জিনিস কিনতে পারেন, ওই লক্ষ্যেই স্টলগুলি তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসনিক উদ্যোগের অভাবে তা এখনও কাজে লাগল না।
কয়েক লক্ষ টাকার অভাবে অনেক জায়গাতেই রাস্তা তৈরি হয় না, বেহাল পথে চলতে হয় সাধারণকে। নদীর ওপর সেতু না থাকায় বর্যায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলেন নদী সংলগ্ন এলাকার অসংখ্য মানুষ। এমন উদাহরণ কম নয়। আবার এমন নজিরও রয়েছে, যেখানে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করেও তা কাজে না লাগানোর। যেমন বেঙ্গল সাফারির সামনে থাকা কর্মতীর্থ। জানা গিয়েছে, পর্যটনমন্ত্রী থাকাকালীন কর্মতীর্থটি গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন গৌতম দেব। তাঁর উদ্যোগেই ৬৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছিল পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তর। কিন্তু চার বছর ধরে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে কর্মতীর্থের ১২টি স্টল। যা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। ফোন না ধরায় পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের বক্তব্য জানা যায়নি। গৌতম দেব বলছেন, ‘জলপাইগুড়ির জেলা শাসকের কাছে আবেদন জানিয়ে দ্রুত এই স্টলগুলি উদ্বোধন করা হবে।’
পাহাড়ে বা ডুয়ার্সে ঘুরতে এসে অনেকেই ‘মাস্ট ভিজিট প্লেস’-এর তালিকায় রাখেন বেঙ্গল সাফারিকে। বিভিন্ন রকমের পশু, পাখি দেখার পাশাপাশি সাফারির আনন্দ নিতে দেশ, বিদেশের প্রচুর পর্যটকের ভিড় হয় প্রায় প্রত্যেকদিনই। এখানে আসা পর্যটকদের কাছে উত্তরবঙ্গে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তৈরি বিভিন্ন জিনিস তুলে ধরতেই কর্মতীর্থের উদ্যোগ। কাঠের হাতি, ট্রে, কাগজের ফুল সহ বিভিন্ন রকমের জিনিস তৈরি করেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা। স্টলগুলি চালু হলে তাঁর মতো অনেকেই আর্থিকভাবে উপকৃত হবেন বলে মনে করেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত রাখি গোস্বামী। বেঙ্গল সাফারির ভেতরে থাকা স্যুভেনিয়র থেকে অনেকেই জিনিস কেনেন। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তৈরি জিনিসের চাহিদা রয়েছে বলে জানান বেঙ্গল সাফারির ডিরেক্টর ই বিজয়কুমার।