রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: দার্জিলিংয়ের চা যেমন বিশ্ববিখ্যাত, ঠিক সেভাবেই কালিম্পংয়ের (Kalimpong) কফিকে (Espresso) বিশ্ববাজারে তুলে ধরতে চাইছে সরকার। জেলায় পরীক্ষামূলক কফি চাষ সফল হওয়ার পর এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কফি চাষের অগ্রগতি ঘটাতে জেলা শাসকের উদ্যোগে একটি কমিটি তৈরি হয়েছে। ওই কমিটিতে জেলা প্রশাসন, উদ্যানপালন বিভাগ এবং কফিচাষিদের প্রতিনিধি রয়েছেন। কালিম্পংয়ের জেলা শাসক বালাসুব্রহ্মণীয়ন টি বলছেন, ‘কালিম্পংয়ে কফি চাষের মাধ্যমে এখানকার অর্থনীতিকে আরও উন্নত করা এবং বিদেশের বাজারে কফি রপ্তানিই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।’ উল্লেখ্য, কালিম্পংয়ের কফি চাষকে প্রথম তুলে ধরেছিল উত্তরবঙ্গ সংবাদ।
সিঙ্কোনা প্রকল্পের অধীনে ২০১৩-১৪ সালে পরীক্ষামূলকভাবে কফি চাষ শুরু হয়। ইতিমধ্যে ওই পরীক্ষায় সাফল্য মিলেছে। যার জন্য প্রকল্পের অধীনে থাকা মংপু, রংগু, জলঢাকা, মনসুং ডিভিশনে অনেকটা জায়গাজুড়ে কফির চাষ হচ্ছে। সেই কফি স্থানীয়ভাবে আউটলেটের মাধ্যমে বিক্রিও করা হচ্ছে। পাশাপাশি, এখানকার উৎপাদিত কিছু কফি দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হচ্ছে বলে প্রকল্প অধিকর্তা ডঃ স্যামুয়েল রাই জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘সিঙ্কোনা প্রকল্পে উৎপাদিত কফি অত্যন্ত সুস্বাদু। বাজারে চলতি যে কোনও কফির সঙ্গে স্বাদ, গন্ধে টেক্কা দিতে পারে এই কফি।’
এই সাফল্যের পর এবার কালিম্পং জেলায় কফি চাষের এলাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার কালিম্পংয়ের সার্কিট হাউসে কফি চাষের উন্নয়ন নিয়ে একটি বিশেষ বৈঠক হয়। বৈঠকে জেলা শাসক, উদ্যানপালন বিভাগের আধিকারিকদের পাশাপাশি কয়েকজন কফিচাষি এবং কৃষক সংঘের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। কফি চাষের পরিধি বৃদ্ধি সহ বিভিন্ন প্রস্তুতি নেওয়া, চাষের এলাকা চিহ্নিতকরণ, কৃষকদের উৎসাহিত করার জন্য এই বৈঠক থেকে জেলা স্তরের একটি কমিটি তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। জেলা শাসক জানিয়েছেন, আগামীতে ব্লক স্তরেও কমিটি তৈরি করা হবে। তাঁর বক্তব্য, ‘দার্জিলিংয়ের চায়ের যেমন বিশ্ববাজারে একটা ব্র্যান্ডিং রয়েছে, কালিম্পংয়ের কফিকেও ব্র্যান্ডিং করা আমাদের লক্ষ্য। এই জন্য এই চাষে উৎসাহী কৃষকদের সবরকম সহায়তা দেওয়া হবে।’