অনির্বাণ চক্রবর্তী, কালিয়াগঞ্জ: অবশেষে বৃষ্টি এল। বৃষ্টি শুরু হতেই ভোজনরসিক বাঙালি ইলিশের (Hilsa) খোঁজে বাজারে পৌঁছে গিয়েছেন। সকাল থেকে ছাতা মাথায় প্যাচপেচে কাদা পেরিয়ে মাছ বাজারে ইলিশের দরাদরি করতে দেখা গেল অনেককে। সুযোগ বুঝে কালিয়াগঞ্জের (Kaliaganj) মাছ বিক্রেতারা ইলিশের চড়া দাম হাঁকছেন বলে অভিযোগ।
বিভিন্ন সাইজের ইলিশে এখন বাজার ভর্তি। মাছ বিক্রেতা গোপাল সাউয়ের কথায়, ‘কাঁচা ইলিশ ও স্টোরের ইলিশ দুই-ই রয়েছে। খোকা ইলিশের দাম কেজিতে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। বাংলাদেশের ইলিশ ২৫০০ টাকা, কোলাঘাটের ইলিশ ১৩০০-১৬০০ টাকা, ফরাক্কার ইলিশ ১০০০-১২০০ টাকার মধ্যে আর দিঘার ইলিশ ৮০০-১২০০ টাকা।’
স্টোরের ইলিশ কলকাতা, শিলিগুড়ি ও বালুরঘাট থেকে পাইকারি দামে কিনে আনেন বিক্রেতারা। গোপাল মানলেন, ‘বৃষ্টির জন্য বাজারে ইলিশের চাহিদা রয়েছে।’ বর্ষাকালে ইলিশ না খেলে বাঙালিয়ানা থাকে না যে। কালিয়াগঞ্জের হাসপাতালপাড়ার দীপা সরকারের বাড়ির কর্তা কাজে ব্যস্ত বলে বাজারে যেতে পারেননি৷ অন্য উপায় না পেয়ে নিয়মিত যাঁর থেকে মাছ কেনেন, তাঁকে ফোন করে বাড়িতে বাংলাদেশের ইলিশ আনিয়েছেন দীপা। দুপুরে কর্তার পাতে ইলিশ ভাজার সঙ্গে মশুর ডালের খিচুড়ি সাজিয়ে দেওয়ার জন্য বুধবার সকালে ব্যস্ত ছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘আবহাওয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাঙালির জীবনে খাদ্যতালিকার পরিবর্তন হয়। বছরের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকমের খাবার খেয়ে আমরা বড় হয়েছি। আজ প্রায় ১ কেজি ওজনের ইলিশ মাছ কিনেছি৷’ দুপুরের মেনুতে খিচুড়ি, ইলিশ ভাজার সঙ্গে ছিল পাঁপড় ভাজা ও চাটনি। রাতে ইলিশ ভাপা ও ইলিশ মাছের মাথা দিয়ে কচু শাক রান্না করার পরিকল্পনা রয়েছে দীপার।
কালীবাড়ি এলাকার সুজাতা লাহিড়ি বলেন, ‘এবছর কিছু নিমন্ত্রণবাড়িতে ইলিশ খেয়েছি। কিন্তু বর্ষার ইলিশ বাড়িতে এনে সেভাবে জমিয়ে খাওয়া এখনও হয়নি।’ তিনি ঠাট্টার সুরে বলেন, ‘দিনভর বৃষ্টির মধ্যে বাজার থেকে ইলিশ না আনা হলে এবছর খিচুড়ির সঙ্গে ইলিশের যুগলবন্দির স্বর্গীয় সুখ থেকে বঞ্চিত থেকে যেতাম। তাই দেরি করিনি। ঘুম ভাঙতে কর্তাকে হুকুম দিয়েছি বাজার থেকে ইলিশ আনতে৷’