সৌরভ দেব, জলপাইগুড়ি: জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজের (Jalpaiguri Medical School) অন্তত ২০ জন সিনিয়ার রেসিডেন্ট চিকিৎসককে বদলির নির্দেশিকা জারি হয়েছে। কিন্তু তাঁদের জায়গায় নতুন চিকিৎসকের নিয়োগ সংক্রান্ত কোনও নির্দেশিকা এখনও কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছায়নি। একসঙ্গে এতজন চিকিৎসক বদলি হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ।
যাঁদের বদলির নির্দেশিকা স্বাস্থ্য ভবন থেকে জারি করা হয়েছে, তাঁদের চলতি সপ্তাহের ডিউটি রোস্টার তৈরি রয়েছে। এই চিকিৎসকরা অন্যত্র বদলি হয়ে গেলে সেই জায়গায় কাদের দায়িত্ব দেওয়া হবে তা নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজের এমএসভিপি ডাঃ কল্যাণ খান বলেন, ‘স্বাস্থ্য ভবন থেকে সিনিয়ার রেসিডেন্টদের (বন্ড) বদলির একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। ওঁরা চলে গেলে সাময়িক সমস্যা তৈরি হতে পারে। তবে আমরা বিষয়টি স্বাস্থ্য ভবনকে জানিয়েছি। আশা করছি যাঁরা অন্যত্র বদলি হয়ে যাবেন তাঁদের জায়গায় স্বাস্থ্য ভবন থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে নতুন চিকিৎসক নিয়োগের ব্যবস্থা করা হবে।’
সোমবার স্বাস্থ্য ভবন থেকে রাজ্যের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে থাকা প্রায় সাড়ে ৭৫০ জন সিনিয়ার রেসিডেন্টের বদলির একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, এর মধ্যে জলপাইগুড়ি সরকারি মেডিকেল কলেজের ২০ জন বিভিন্ন বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন। এই সিনিয়ার রেসিডেন্ট চিকিৎসকরা জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ এবং ওয়ার্ডে চিকিৎসা পরিষেবার দায়িত্বে থাকেন। যেহেতু এই সিনিয়ার রেসিডেন্ট চিকিৎসকরা বিভিন্ন বিভাগে বিশেষজ্ঞ, সেকারণে চিকিৎসা পরিষেবার ক্ষেত্রে তাঁদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বিকল্প ব্যবস্থা না করে আচমকা ওই চিকিৎসকদের বদলি করে দেওয়া হলে মেডিকেলের কাজ কীভাবে চলবে, তা বুঝতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।
বর্তমানে জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজে মোট চিকিৎসকের সংখ্যা প্রায় ১৫০। প্রয়োজনের তুলনায় এমনিতেই বিভিন্ন বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাব রয়েছে। তার ওপর ২০ জন চিকিৎসকের একসঙ্গে বদলিতে বড় ধাক্কা লাগবে। সব থেকে বেশি সমস্যা তৈরি হবে মেডিসিন, অর্থোপেডিক এবং সার্জারি বিভাগে। এই বিভাগগুলিতে প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসক এমনিতেই কম।
মেডিকেল কলেজ সূত্রে খবর, সরকারি নিয়মেই রয়েছে এই সিনিয়ার রেসিডেন্ট চিকিৎসকরা এমডি, এমএস করার পর মেডিকেল কলেজেগুলিতে এক বছর কাজ করবেন। এক বছর পর তাঁদের বিভিন্ন জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের অধীনে থাকা হাসপাতালগুলিতে কাজ করতে হবে। সেই নিয়ম মেনেই এই চিকিৎসকদের অন্যত্র বদলি করতে হচ্ছে। জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজের এক বিভাগীয় প্রধান বলেন, ‘এই সিনিয়ার রেসিডেন্টরা স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে সিনিয়ার চিকিৎসকদের অনেকটাই সাহায্য করে থাকেন। যেহেতু তাঁরা একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সেকারণে তাঁদের ওপর অনেকটাই ভরসা করে থাকে কর্তৃপক্ষ। তাঁরা চলে গেলে সমস্যা হওয়াই স্বাভাবিক। তবে আশা করছি স্বাস্থ্য দপ্তর নতুন সিনিয়ার রেসিডেন্ট নিয়োগ করবে।’