অনসূয়া চৌধুরী, জলপাইগুড়ি: জীবনটা আর পাঁচটা মেয়ের মতো নয়। মন চাইলেই চার দেওয়ালের বাইরে পা রাখবে বা ঠেকে বসে চা খাবে৷ রাস্তায় ফুচকার দোকানে বান্ধবীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক ফুচকা খাবে। কখনও মন চাইলেই হুটহাট করে বেরিয়ে পড়ার উপায় থাকে না তাদের। কেননা ওরা হোমে থাকে। খেলতে যাওয়া থেকে বাইরে ঘুরতে যেতেও প্রয়োজন তাদের অনুমতি৷
তবে, এবার হোমের মেয়েদের স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে এগিয়ে এসেছে অনুভব হোম কর্তৃপক্ষ (Jalpaiguri)৷ ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ৫ জন হোমের মেয়েকে নিয়ে শুরু হয়েছে মাশরুম চাষ (Mushroom cultivation)। ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে তারা প্রায় ৫০ কেজির মতো মাশরুম ফলিয়েছে।
এবিষয়ে অনুভব হোমের কোঅর্ডিনেটর দীপশ্রী রায় বলেন, ‘১৮ বছর হয়ে গেলে নিয়ম অনুয়ায়ী মেয়েদের হোমে রাখা যায় না। তবে, তাদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে আমরা সবসময় সাহায্য করি। জীবনে চলার জন্য অর্থের প্রয়োজন রয়েছে। তাই ৫ জন হোমের মেয়েকে নিয়ে মাশরুম চাষ শুরু করেছি।’ তাঁর আরও সংযোজন, প্রথমবার অবশ্য হোমের মেয়েদের খাবারের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে মাশরুম। কিছু সংখ্যক মাশরুমের পকোড়া বানিয়ে বিক্রি করেছিল তারা। বর্তমানে যারা মাশরুম তৈরি করছে তারাও কয়েক বছর পর ১৮-তে পা দেবে। তারা যাতে হোম ছেড়ে বের হয়ে সমস্যায় না পড়ে তাই তাঁরা ভেবেছেন হোমের চাষ করা মাশরুম বাইরে বিক্রি করবে হোমের গণ্ডির বাইরে থাকা মেয়েরা। এতে কিছু অর্থ তারাও নেবে। বাকি টাকা ওই ৫ জনের অ্যাকাউন্টে জমা থাকবে।
মাশরুম চাষে অনুভব হোম কর্তৃপক্ষ ১৫০টি সিলিন্ডার ব্যবহার করেছে। ২১ দিন অন্তর ফলন বেশ ভালোই হয়েছে৷ প্রথমবারের অভিজ্ঞতাও বেশ ভালো সকলের। হোমের মেয়েদের সঙ্গে মাশরুম চাষে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন ওই হোমের দায়িত্বে থাকা দুজন।