পূর্ণেন্দু সরকার, জলপাইগুড়ি: শত্রুর শত্রু বন্ধু! কিন্তু শত্রুর বন্ধু কখনও বন্ধু হতে পারে না। বর্তমানে তুরস্কের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কটা অনেকটা সেইরকমই। সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধে পাকিস্তানকে সমর্থন করেছে তুরস্ক। তাই জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) শহরে তুরস্ক থেকে আপেল (Turkish apple) আমদানি (Import) বন্ধ করে দিয়েছেন দিনবাজারের ফল ব্যবসায়ীরা। ভারত এবং পাকিস্তানের যুদ্ধ আবহের আগে পর্যন্ত দিনবাজারে তুরস্কের আপেল ঢালাও বিক্রি করেছেন ফল ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এখন সেই ছবিটা বদলেছে।
পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ানোয় ভারত সরকার তুরস্কের ব্যবসা-বাণিজ্য ভারতে করা নিয়ে কড়া পদক্ষেপ করেছে। এরপরই তুরস্কের আপেল আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ফল ব্যবসায়ীরা। তুলনায় কাশ্মীর এবং আরব আমিরশাহির আপেল বেশি করে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের কথায়, আগে দেশ, তারপর ব্যবসা।
দিনবাজারে ফল বিক্রি করেন দ্বারকাপ্রসাদ শা। তাঁর দোকানেও আগে মিলত তুর্কি আপেল। বর্তমানে সেখানে মেলে আরব এবং কাশ্মীরের আপেল। তাঁর বক্তব্য, ‘পহলগামে জঙ্গিদের হাতে আমাদের দেশের মানুষের মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারিনি। সেই জঙ্গিদের পাশে যারা থাকবে, তারাই আমাদের শত্রু। তুরস্কও সেই হিসেবে আমাদের শত্রুদেশ। তাই তুরস্কের কোনও সামগ্রী, বিশেষ করে আপেল এখানে বিক্রি করতে দেওয়া হবে না।’
ক্রেতারা বাজারে প্রথমে কাশ্মীরের আপেল খোঁজ করেন। কিন্তু সেই আপেলের দাম বেশি হওয়ায় তুরস্ক এবং আরবের আপেল কিনতে বাধ্য হন অনেকে। তবে কোন আপেলটা তুরস্কের, কোনটা অন্য জায়গার, সেটা বোঝা একটু মুশকিল। কিন্তু তুরস্কের আপেল জানলে কেউ সেটা কিনবেন না, জানালেন ক্রেতা মানব রায়।
কেমন দাম এই আপেলগুলোর? এক কেজি তুর্কি আপেলের দাম ২২০-২৫০ টাকা। অন্যদিকে, ওই পরিমাণ কাশ্মীরি আপেল বিক্রি হত ৩৫০-৪০০ টাকায়। আরবের আপেলের দামও কেজিতে ৩০০ টাকার বেশি। ফলে তুর্কির আপেলের ভালো চাহিদা ছিল বলে জানালেন দিনবাজারের ফল ব্যবসায়ী পার্থ নন্দী। তাঁর কথায়, ‘তুর্কি আপেলের চাহিদা বেশি থাকায় আমাদের বিক্রিও ভালো হত। কিন্তু যে দেশ আমাদের দেশের সঙ্গে গদ্দারি করেছে, তাদের সঙ্গে ব্যবসা নয়। নিজের দেশের প্রতি সম্মান রেখে তুরস্কের আপেল আমদানি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’ দিনবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির মলয় সাহাও একই কথা বললেন।
ফল ব্যবসায়ীরা জানালেন, বিভিন্ন পুজো-সংক্রান্তি ছাড়া প্রতিদিন দিনবাজারে ৫০ কেজির মতো আপেল বিক্রি হত। যার মধ্যে তুরস্কের আপেলই বিক্রি হত ৩৫ কেজির মতো। এখন সেখানে তুরস্কের একটাও আপেল থাকছে না।