Jalpaiguri | খামখেয়ালি আবহাওয়া, ‘প্ল্যান-বি’ তৈরি উদ্যোক্তাদের

Jalpaiguri | খামখেয়ালি আবহাওয়া, ‘প্ল্যান-বি’ তৈরি উদ্যোক্তাদের

শিক্ষা
Spread the love


সপ্তর্ষি সরকার, ধূপগুড়ি: পুজোর শেষমুহূর্তের প্রস্তুতিতে দম ফেলার জো না থাকলেও আকাশের দিকে তাকালেই চিন্তার চওড়া ভাঁজ পড়ছে আয়োজকদের কপালে। সারাবছরের পরিকল্পনা, বাজেট অনুযায়ী টাকা জোগাড়, ডেকোরেটার থেকে লাইটম্যান, মৃৎশিল্পী থেকে পুজোর থিম রূপায়িত করার ঝক্কি কম নয়। এত কিছু সামলে শেষমেশ পুজোর দিন ক’টা যদি বৃষ্টিতে ধুয়ে যায় তাহলে আফসোসের শেষ থাকবে না।

পুজো উন্মাদনা শুরুর মুখে আবহাওয়ার মেজাজ-মর্জি এবং বিশেষজ্ঞদের সাবধানবাণী আশঙ্কা ধরাচ্ছে পুজো আয়োজকদের বুকে। ক’দিন আগেও যে পুজোকর্তাদের মুখে আশা এবং আত্মবিশ্বাসের সুর ছিল তাঁরাই এখন তড়িঘড়ি প্ল্যান-বি নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন। আবহাওয়ার খামখেয়ালিতে পুজোর আনন্দ মাটি হলে প্রয়োজনে বাড়তি সময়ের দাবি তুলেছেন জেলা শহরের পান্ডাপাড়া সর্বজনীন পুজো কমিটি। তাদের কর্মকর্তা পার্থ বারুই বলেন, ‘মূল চারটে দিন যদি বৃষ্টি হয় তাহলে এক-দু’দিনের জন্য প্রশাসনিক অনুমতি বাড়ানোর দাবি জানাব আমরা। পুজো শুধু ধর্মীয় আচারেই সীমাবদ্ধ নেই। বৃহত্তর সামাজিক কর্মকাণ্ড এবং মেলবন্ধনের এই সময় কোনওভাবেই নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না।’

গত কয়েকদিনের পরিস্থিতি দেখে শহরতলি এবং গ্রামীণ এলাকার বারোয়ারি পুজো কর্তাদের অনেকেই মণ্ডপের ছাউনিতে তারপোলিন বা প্লাস্টিকের বদলে টিন বসাতে বলছেন ডেকোরেটারকে। আলাদাভাবে জলনিকাশির ব্যবস্থাও থাকছে। যেসব জায়গায় স্থায়ী মণ্ডপ বা নাটমন্দিরে পুজো হয় সেখানে বৃষ্টিতে ধুয়ে যাওয়ার আশঙ্কা না থাকলেও লোকেদের যাতায়াত, পুজোর আয়োজন নিয়ে চিন্তা থেকেই যাচ্ছে। মালবাজার শহরে বড় বাজেটের পুজো আয়োজক এটিও ক্লাবের সম্পাদক অমিতাভ ঘোষের গলায় বৃষ্টির মুড নিয়ে হতাশার সুর স্পষ্ট। অসহায় গলায় তিনি জানালেন, নির্মীয়মাণ মণ্ডপের ভেতরে দর্শকের জন্যে জায়গা বাড়ানোর চেষ্টা করছেন তাঁরা।

জেলায় অনুমোদিত পুজোর সংখ্যা হাজারের বেশি হলেও বড় বাজেটের পুজোর সংখ্যা অনেক কম। আবহাওয়ার রুদ্ররূপ দেখে সবথেকে বেশি দুশ্চিন্তা এই বড় পুজো কমিটিগুলোরই। আবেগের পাশাপাশি স্পনসরদের বিশাল অঙ্কের লগ্নিও রয়েছে বড় পুজোগুলোয়। ধূপগুড়ি শহরের অন্যতম বড় দুর্গাপুজোর আয়োজক নবজীবন সংঘের কর্মকর্তা গৌতম পালের কথায়, ‘যা পরিস্থিতি তাতে আত্মবিশ্বাস ধরে রাখা মুশকিল। আমাদের পুজোর মাঠের চারদিকে আবাসিক বাড়ি এবং জলাশয় থাকায় মাঝারি বৃষ্টি হলেই জল জমার আশঙ্কা থাকে। এজন্য আগেভাগে পাম্পের ব্যবস্থা রাখছি। দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বালি-বজরি আনিয়ে রাখা হচ্ছে। বাকিটা আপৎকালীন মোকাবিলার ওপর ছাড়া রয়েছে।’

গ্রামেগঞ্জে মণ্ডপের সঙ্গেই বড় চিন্তা পথঘাট নিয়েও। জলকাদায় পুজোর আয়োজনে মারাত্মক সমস্যা হবে বলেই আশঙ্কা বেশিরভাগ পুজোগুলোর। সেক্ষেত্রে গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে পথ সংস্কারের দাবিও জোরালো হচ্ছে। শহুরে আয়োজকদের মধ্যেও দর্শনার্থীদের জন্যে বিকল্প ভাবনা শুরুর কথা মেনে নিয়ে ময়নাগুড়ি পশ্চিমপাড়া বারোয়ারি পুজো কমিটির সম্পাদক শুভজিৎ বসুর কথায়, ‘দর্শনার্থীরা মণ্ডপে যাতায়াত না করতে পারলে সমস্ত আয়োজনই বৃথা। এজন্যে আমরা কোনও বিকল্প ভাবনাই বাদ রাখছি না। মণ্ডপের ভেতরের অংশ যতটা সম্ভব বৃষ্টি থেকে বাঁচার মতো করে গড়া হয়েছে। এর পাশাপাশি কাঠের পাটাতন বিছিয়ে বিকল্প পথে আনাগোনার পরিকল্পনা রয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে সদস্যরা দ্রুত কাজ করবেন।’ ভার্চুয়াল উদ্বোধন হয়ে গেলেও জেলাজুড়ে বড় পুজোমণ্ডপগুলির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের হিড়িক পড়বে বৃহস্পতিবার থেকে। দেবীর বোধনের আগে বরুণ দেব বাধা হয়ে দাঁড়াবেন কি না, তা নিয়ে দোলাচলের মধ্যেই এখন উদ্বোধনের চিঠি বিলিতে ব্যস্ত পুজো কর্মকর্তারা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *