পূর্ণেন্দু সরকার, জলপাইগুড়ি: আলুবীজের জন্য আর পঞ্জাবের ওপর নির্ভরশীলতা নয়, প্রয়োজনীয় আলুবীজ এরাজ্যেই তৈরি হবে। তবে তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও পাঁচ বছর। কোথায়, কীভাবে আলুবীজ তৈরি করা হবে, সেই পরিকল্পনা করতে শুক্রবার জলপাইগুড়িতে (Jalpaiguri) জেলার উপকৃষি অধিকর্তার দপ্তরে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। উপস্থিত ছিলেন উত্তরবঙ্গের অতিরিক্ত কৃষি অধিকর্তা নিখিল কর্মকার। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, ‘নিজস্ব তৈরি আলুবীজ পেতে আরও ৫ বছর সময় লাগবে। তবে, এই আলুবীজ অনেক উন্নত এবং বেশি উৎপাদনশীল। রোগপোকার আক্রমণ প্রতিরোধক আলুবীজ তৈরি করা হবে।’
আলুবীজের ক্ষেত্রে আত্মনির্ভর হতে চাইছে রাজ্য। বছরে প্রয়োজনীয় ৩ লক্ষ মেট্রিক টন আলুবীজ উৎপাদন করার লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে রাজ্যের কৃষি দপ্তর। এর মধ্যে ১ লক্ষ ৮০ হাজার থেকে ২ লক্ষ মেট্রিক টন বা ৬০ শতাংশ আলুবীজ উত্তরবঙ্গেই তৈরি করা হবে। প্রয়োজনীয় আলুবীজ দীর্ঘ বছর ধরেই পঞ্জাব থেকে আনেন উত্তরবঙ্গের আলু চাষিরা। তবে দীর্ঘ বছরের অভিজ্ঞতায় তাঁরা বুঝতে পারছেন, বর্তমানে পঞ্জাবের বীজে উৎপাদন কমছে, বাড়ছে রোগপোকার আক্রমণ। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের মণ্ডলঘাটের আলুচাষি হেমন্ত বর্মন এমন বিষয়গুলি তুলে ধরে বলেন, ‘পঞ্জাবের আলুবীজের দামও এখন অনেক বেশি পড়ছে। বৃদ্ধি পেয়েছে পরিবহণ খরচও।’ উৎপাদন কম, রোগপোকার আক্রমণে গাছ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তাঁরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে জানান বেশ কয়েকজন আলুচাষি।
চাষিদের থেকে এমন নানা অভিযোগ পাওয়ার পরই রাজ্যের তরফে আলুবীজ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, কৃষি দপ্তরের আধিকারিকেরা উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও ইন্টারন্যাশনাল পটেটো সেন্টারের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। এদিনের বৈঠকে উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকর্তা (গবেষণা) অশোক চৌধুরী, কৃষি দপ্তরের উত্তরবঙ্গ রেঞ্জের এডিএ হরেন্দ্রনাথ সরকার, ইন্টারন্যাশনাল পটেটো সেন্টারের সূর্য দাস ও ডঃ তন্ময় দে এবং জলপাইগুড়ি উপকৃষি অধিকর্তা গোপাল সাহা উপস্থিত ছিলেন।