উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ কলকাতা থেকে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার কিলোমিটার দূরে স্পেনে বসে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর উপর হামলার ছক কষেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে যাদবপুরের এক প্রাক্তনীর বিরুদ্ধে। এই ছাত্রের বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিশও জারি করেছিল কলকাতা পুলিশ। স্পেন থেকে দেশে ফিরতেই গবেষক ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শুক্রবার ধৃতকে আলিপুর আদালতে তোলা হলে আগামী ১৮ অগাস্ট পর্যন্ত পুলিশ হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছে বিচারক। আদালতে পুলিশের দাবি, দুবাইয়ে বসে আফতাব আনসারি আমেরিকান সেন্টারে বসে হামলার ছক করেছিলেন। তেমনই স্পেনে বসে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর উপর হামলার ছক কষেছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী হিন্দোল মজুমদার।
জানা গিয়েছে, স্পেনে গবেষণারত ধৃত যাদবপুরের প্রাক্তনীর নাম হিন্দোল মজুমদার। গত ১ মার্চ শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে হেনস্থা এবং তাঁর গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। তাতে নাম জড়ায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী হিন্দোলের। বর্তমানে সে স্পেনে গবেষণার কাজে যুক্ত। পুলিশের দাবি, স্পেনে বসেই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর উপর হামলার ছক তৈরি করেন হিন্দোলই। তিনিই হামলার ব্লু প্রিন্ট তৈরি করে দেন যাদবপুরের পড়ুয়াদের। বেশ কিছু হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট হাতে এসেছে পুলিশের। এই তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে হিন্দোলের বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিশ জারি করে কলকাতা পুলিশ।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার স্পেন থেকে দিল্লি বিমানবন্দরে নামার পরেই অভিবাসন বিভাগ হিন্দোলকে আটকায় প্রথমে। পরে তাঁকে হেপাজতে নেয় দিল্লি পুলিশ। তার পর কলকাতা পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়। সেই খবর পাওয়ার পরেই কলকাতা পুলিশের একটি দল দিল্লিতে গিয়ে ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়ে কলকাতায় নিয়ে আসে। শুক্রবার তাঁকে ফের তোলা হয় আলিপুর আদালতে। তাঁর আইনজীবী মক্কেলের জামিনের জন্য আবেদন করেন। তবে তা খারিজ করে দেন বিচারক। হিন্দোলকে আগামী ১৮ অগাস্ট, সোমবার পর্যন্ত পুলিশি হেপাজতের নির্দেশ দিল আদালত।
হিন্দোল প্রসঙ্গে সরকারি আইনজীবী সৌরীন ঘোষাল বলেন, ‘‘দুবাইতে বসেই কলকাতায় আমেরিকান সেন্টারে হামলায় ছক কষেছিল আফতাব আনসারি। তিনিও সশরীরে উপস্থিত ছিলেন না। তাঁর নির্দেশেই পুরো ঘটনা সংগঠিত হয়েছিল। পুলিশ ওই ঘটনায় কয়েক জন অভিযুক্তকে ঝাড়খণ্ড থেকে গ্রেপ্তার করেছিল। তার পরেই বিদেশে বসবাসকারী ওই ঘটনার মূল চক্রী আফতাব আনসারির নাম জানা গিয়েছিল। পরে দুবাই থেকে আফতাব আনসারিকে গ্রেফতার করা হয়।”
এদিকে হিন্দোলের মায়ের অভিযোগ, ‘‘পুলিশের চিঠি আসার পর হিন্দোলকে বলি, ও যেন মেল করে পুলিশকে। সেগুলো ও সঙ্গে সঙ্গেই করেছিল। চিঠিগুলো যথাযথ জায়গায় পৌঁছেছিল। কোনও দিন ভাবতেই পারিনি যে, এ রকম পরিস্থিতি তৈরি হবে। কোনও অনৈতিক কাজের সঙ্গে আমাদের পরিবারের কেউ যুক্ত হয়নি, হবেও না।’’
হিন্দোলের বাবার অভিযোগ, ‘‘বাড়িতে কোনও সমন আসেনি। লুক আউট নোটিস কেন হল, বুঝতে পারছি না। অভিযোগটা হাস্যকর। যাদবপুরের ছাত্রেরা এত অপরিণত নয় যে, বিদেশ থেকে কেউ কিছু বলল, হয়ে গেল।’’
উল্লেখ্য, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফার্মেসিতে বি-টেক করেছিলেন হিন্দোল। তার পর তিনি চলে যান স্পেন।