বিশ্বজিৎ সরকার, রায়গঞ্জ: বাবাকে অন্য মহিলার সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেছিল মেয়ে। প্রতিবাদও করেছিল। সেই রাগে মেয়ের ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন গুণধর বাবা। ১০ ডিসেম্বর ইটাহার (Itahar) থানা এলাকার ঘটনা। পুলিশি নির্লিপ্ততার অভিযোগ এনে শুক্রবার মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হলেন মা। পুলিশ সুপারকেও ঘটনাটা জানিয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
তাদের বক্তব্য, প্রতিবেশী এক তরুণীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় বাবাকে দেখে ফেলা এবং প্রতিবাদ করার শাস্তি হিসেবে সেই বাবা মেয়ের উপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তাতে মেয়েটির দুই হাত ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়। মেরে দুই পা ভেঙে দেওয়া হয়। বুকের পাঁজরের একটি হাড় ভেঙে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই তরুণীকে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। তার মা স্বামীর বিরুদ্ধে ইটাহার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ , পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। ৪০ দিন হাসপাতালে কাটিয়ে সেই মেয়ে বাড়িতে ফিরেছে। এরপরেই এদিন পুলিশ সুপার ও আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তারা।
নির্যাতিতা এদিন আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে বলেন, ‘সেদিন বাড়িতে মা ছিল না। আমি বাইরে থেকে বাড়ি ফিরে একটা ঘরে একটি মেয়ের সঙ্গে বাবাকে আপত্তিজনক অবস্থায় দেখে ফেলি। মেয়েটিকে বাড়ি থেকে বের করে দিই। সেই কারণে বাবা আমাকে এমনভাবে মেরেছিল যে প্রায় দেড় মাস হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল।’
নির্যাতিতার মায়ের বক্তব্য, তাঁর স্বামী পেশায় ঠিকাদার ও এলাকায় প্রভাবশালী বলে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। তাই পুলিশের উপর আস্থা হারিয়ে এদিন উত্তর দিনাজপুর জেলা আদালতে বিচারকের দ্বারস্থ হন তিনি। আইনজীবী শুভজিৎ দে বলেন, ‘অভিযুক্ত তার মেয়েকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করার চেষ্টা করে। এখনও তাকে গ্রেপ্তার না করায় বিচারকের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।’ রায়গঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মহম্মদ সানা আখতার অবশ্য পুলিশের গাফিলতির বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘অভিযুক্তের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। যত দ্রুতসম্ভব তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।’