বর্ধমান: ভারত ২০৩৫ সালের মধ্যে নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন তৈরি করে ফেলবে। আর সেটা হয়ে গেলেই ২০৪০ সালের মধ্যে উৎক্ষেপণযান প্রযুক্তি ও মহাকাশযান প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বিশ্বের উন্নত দেশগুলির সমকক্ষ হয়ে উঠবে ভারতও। বুধবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের (Burdwan College) সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এমনটাই বললেন ইসরোর চেয়ারম্যান (ISRO Chairman) ভি নারায়ণন (V. Narayanan)।
এদিন চন্দ্রযান অভিযান নিয়ে তিনি বলেন, ‘এ বছর প্রথম আনক্রুড মিশন হবে ডিসেম্বরে। তাতে বায়ুমিত্র নামে এক মানবসদৃশকে পাঠানো হবে। ২০২৬ সালে এরকম আরও দু’টি মিশনের পর ২০২৭ সালের প্রথম দিকে মানুষকে যুক্ত করে এই অভিযান হবে। চন্দ্রযান ফোর চন্দ্রপৃষ্ঠ অবতরণ করে নমুনা সংগ্রহ করবে। এছাড়াও চন্দ্রযান ফাইভ প্রেরণের ব্যাপারে প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে।’
এরপর ইসরোর সাফল্য প্রসঙ্গেও নারায়ণন বলেন, ‘চন্দ্রযান উৎক্ষেপণ করতে হলে ৩৭ হাজার কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিবেগ দিতে হয়। সেই ধরনের ইঞ্জিন আমাদের তৈরি করতে হয়েছে। এই প্রযুক্তি ভারতকে দেওয়া হয়নি। উন্নত দেশগুলি আমাদের উন্নয়ন রুখে দিতে চাইলেও আজ আমরা তিনটি ইঞ্জিন তৈরি করেছি। আজ ভারত সেই কয়েকটি দেশের মধ্যে একটি যাদের হাতে এই জটিল প্রযুক্তি রয়েছে।’
এদিন বিভিন্ন প্রকল্পের বিষয়েও বক্তব্য রাখেন ইসরোর চেয়ারম্যান। তাঁকে এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে ডি.এস.সি প্রদান করা হয়। ভি নারায়ণন ছাড়াও আরও তিন প্রফেসর পদ্মানাভন বলরাম, ডাঃ শ্যামাশিষ বন্দ্যোপাধ্যায় ও ডাঃ দেবীপ্রসাদ শেট্টি ডিএসসি পান। তবে ডাঃ শেট্টি এদিনের সমাবর্তনে অনুপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও সমাবর্তনে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু অনুপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ভি নারায়ণনের জন্ম তামিলনাডুতে। সেখানেই তাঁর বেড়ে ওঠা। তবে স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে তিনি চলে আসেন পশ্চিমবঙ্গে। খড়গপুর আইআইটি থেকে ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। পরে অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পিইচডি করেন। পিএইচডি শেষ করে তিনি যোগ দেন ইসরোতে। ১৯৮৪ সালে রকেট এবং মহাকাশ প্রপালশন বিশেষজ্ঞ হিসাবে ভারতীয় মহাকাশ সংস্থায় যোগ দেন নারায়ণ। ২০১৮ সালে লিকুইড প্রপালশন সিস্টেম সেন্টারের ডিরেক্টর হিসেবে তাঁকে নির্বাচিত করা হয়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইসরোর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন তিনি।