সানি সরকার, শিলিগুড়ি: উত্তরের ‘চাষ-কথা’ এবার সুদূর পেরুতে। দক্ষিণ আমেরিকায় দেশটিতে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠবে এখানকার স্বর্ণশিল্পের হালহকিকত। দুই দেশের শিল্প-বাণিজ্য সম্পর্ককে আরও মজবুত করতে ২৬-৩০ এপ্রিল পেরু সফর করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন (Nirmala Sitharaman)। আর তাঁর সঙ্গী হয়েই দক্ষিণ আমেরিকায় পা রাখতে চলেছেন উত্তরের তিন বাঙালি শিল্পপতি (Industrialists) মান্না চৌধুরী, বিপ্লব ঘোষ ও বিশাল ঘোষ।
জানা গিয়েছে, সফরকালে ভারতের অর্থমন্ত্রী সেখানকার রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক মজবুত করতে আলোচনায় বসবেন পেরুর শিল্পপতি এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। পরিদর্শন করবেন পেরুর রাজধানী লিমার কয়েকটি কৃষি ও শিল্পক্ষেত্রে।
ভারতে নির্দিষ্ট একটি সময়ে আলুর চাষ হলেও পেরুতে বছরের প্রতিটি ঋতুতেই তা হয়ে থাকে। অবশ্য তা গ্রিনহাউসের মাধ্যমে। সবচেয়ে বড় কথা, পেরু একমাত্র দেশ, যেখানে আলুর প্রতিটি প্রজাতি পাওয়া যায় এবং তা সংরক্ষিত থাকে। পটেটো চিপস তৈরির ক্ষেত্রেও পেরু টেক্কা দিয়েছে একাধিক দেশকে। ফলে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়ে এখানে যেতে পারার সুযোগ মেলায় যারপরনাই খুশি উত্তরবঙ্গের বিশিষ্ট আলু ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি মান্না চৌধুরী।
তিনি বলছেন, ‘মূলত চাষ পদ্ধতি এবং সংরক্ষণ প্রক্রিয়া শিখতে যাচ্ছি। কিন্তু সুযোগ যখন মিলছে, তখন আমাদের এখানকার আলু চাষের পদ্ধতিও তুলে ধরব।’ উত্তরবঙ্গে পটেটো চিপস হাব গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্য সরকারের। মান্নার বক্তব্য, ‘পেরুর শিক্ষা এখানকার হাব তৈরির ক্ষেত্রে কাজে লাগানোর চেষ্টা করব।’
তবে কীভাবে এখানকার জুয়েলারিশিল্প পেরুর বাজার ধরতে পারে, সেই চেষ্টা থাকবে স্বর্ণশিল্পপতি বিপ্লব ও বিশালের। বিপ্লবের কথায়, ‘স্বর্ণশিল্পের ক্ষেত্রে পেরু অনেক এগিয়ে। কিন্তু ডিজাইনিং জুয়েলারির ক্ষেত্রে ভারত অগ্রগণ্য। যে কারণে দক্ষিণ আমেরিকার দেশটিতে ভারতীয় ডিজাইনিং জুয়েলারির যথেষ্ট চাহিদা আছে। তাই কীভাবে সেখানকার বাজার আরও ভালোভাবে ধরা যায়, সেই চেষ্টা তো অবশ্যই থাকবে।’ রপ্তানিতে নজর রয়েছে বিশালেরও। তিনি বলছেন, ‘অর্থনৈতিক দিক দিয়ে পেরু অনেক উন্নত। ফলে সেখানকার সঙ্গে যদি ব্যবসা-বাণিজ্য করা যায়, তবে আমরাও আর্থিক দিক থেকে কিছুটা উন্নত হব। বাণিজ্যের পরিধি যত বাড়বে, ততই কর্মসংস্থানের পরিসর বৃদ্ধি পাবে।’
এই সফরে সুযোগ মিলেছিল কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজের (সিআইআই) উত্তরবঙ্গ জোনের প্রাক্তন চেয়ারনম্যান সঞ্জিত সাহার। কিন্তু ব্যক্তিগত কিছু সমস্যার জন্য পেরুর বিমানে ওঠা হচ্ছে না তাঁর।