উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ বৃহস্পতিবার ভারত এবং ব্রিটেনের মধ্যে যে মুক্ত বানিজ্য চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছে, তার ফলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ বার্ষিক প্রায় ৩৪ বিলিয়ন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২ লক্ষ কোটির বেশি) বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লন্ডন সফর চলাকালীন এই চুক্তিটি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাক্ষরিত হয়, যেখানে উভয় পক্ষের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল এবং যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য সচিব জোনাথন রেনল্ডস।
গত এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে এটিকে ভারতের সবচেয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষী বাণিজ্য চুক্তি বলে মনে করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এটিকে ব্রেক্সিট-পরবর্তী সময়ে যুক্তরাজ্যের প্রথম বড় চুক্তি হিসাবেও গণ্য করা হচ্ছে। উভয় সরকারই এটিকে তাদের অর্থনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক বলে অভিহিত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদি এই চুক্তিকে উভয়পক্ষের সমৃদ্ধির পথে একটি নতুন রোডম্যাপ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। আশা করা হচ্ছে, এই চুক্তির ফলে কৃষক ও জেলে থেকে শুরু করে নানা ক্ষেত্রের ছোট ব্যবসায়ীরা দারুন ভাবে উপকৃত হবেন। প্রসঙ্গত, এই চুক্তির দরুন বস্ত্র, রত্ন ও অলংকার, সামুদ্রিক খাবার, চামড়াজাত পণ্য এবং প্রক্রিয়াজাত খাবারের মতো ভারতীয় সামগ্রীগুলি এখন যুক্তরাজ্যে কোনও শূল্ক ছাড়াই রপ্তানী করা যাবে। অপরদিকে, চিকিৎসা সরঞ্জাম, মহাকাশ অভিযান সম্পর্কিত যন্ত্রাংশ, গাড়ি, হুইস্কি, চকলেট এবং প্রসাধনীর মতো ব্রিটিশ পণ্যগুলি ভারতীয় বাজারে খুবই কম শুল্কের বিনিময়ে প্রবেশ করবে। আমদানীকৃত এই ব্রিটিশ সামগ্রীগুলির ওপর আরোপ করা শুল্ক গড়ে ১৫% থেকে প্রায় ৩%-এ নেমে আসবে বলে জানা গিয়েছে। ইওয়াই ইন্ডিয়া (EY India)-র ট্রেড পলিসি লিডার অগ্নিশ্বর সেন এই চুক্তিকে একটি রূপান্তরমূলক পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন,‘গুরুত্বপূর্ণ ভারতীয় পন্যগুলির রপ্তানির ওপর শুল্ক অপসারণের ফলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং শ্রম-নিবিড় খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে। এই চুক্তিতে ভারতীয় পেশাদারদের জন্য উল্লেখযোগ্য সুবিধা রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম ভিসার নিয়মে শিথিলতা এবং একটি যুগান্তকারী সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এর ফলে উভয়পক্ষের উপভোক্তারাই কম দামের মধ্যে অনেক বেশি বিকল্প খুঁজে পাবেন।’