উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: ইরানে ইজরায়েলের হানা নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারত। শুক্রবার ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনালাপে এই উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (India-Israel)। একই সঙ্গে নেতানিয়াহু নিজেও ইরানের সঙ্গে ইজরায়েলের নতুন সংঘাতের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে বিস্তারিত অবহিত করেন। দুই নেতার পরষ্পরের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা হয়েছে।
শুক্রবার ইজরায়েল ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ শুরু করে ইরানের পারমাণবিক পরিকাঠামো, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা এবং সামরিক কমান্ডারদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। এই হামলায় মৃত্যু হয়েছে ইরান সেনাবাহিনী (Revolutionary Guard)-র কমান্ডার হোসেন সালামি এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান (Chief Of Employees) মহম্মদ হোসেন বাগেরির। মারা গিয়েছেন ৬ জন পরমাণু বিজ্ঞানি ও নিরাপত্তা বাহিনীর একাধিক আধিকারিকের।
এরপর পালটা প্রত্যাঘাত করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইরানও। এহেন পরিস্থিতিতে ভারত দুপক্ষকেই সংযত থেকে শান্তি রক্ষার বার্তা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদি তার এক্স হ্যান্ডল পোস্টে বলেন, ‘আমি ভারতের উদ্বেগ ভাগ করে নিয়েছি এবং এই অঞ্চলে দ্রুত শান্তি ও স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছি।’
জানা গেছে, শুধু প্রধানমন্ত্রী মোদি নয়, ইজরায়েলের হামলার পেছনে সমর্থন আদায়ের জন্য বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু নেতানিয়াহু জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ এবং ফরাসি রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সহ অনেক বিশ্বনেতার সঙ্গে কথা বলেছেন। তবে নেতানিয়াহু এখনও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেননি, তবে মার্কিন রাষ্ট্রপতি ইতিমধ্যেই ইজরায়েলের পাশে দাঁড়িয়ে ইরানকে কঠোরভাবে সতর্ক করে বলেছেন, ‘পরমাণু চুক্তিতে সই না করলে ভয়ঙ্কর পরিণতি হবে ইরানের।’
১৯৮০-এর দশকের ইরান-ইরাক যুদ্ধের পর থেকে ইরানের উপর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হামলা হয় এদিনই। ইজরায়েলের হামলায় ইরানের প্রধান পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র এবং ক্ষেপণাস্ত্র পরিকাঠামো রয়েছে। ইরানের সংবাদমাধ্যমের মতে, ইজরায়েলের হামলার পর তেহরানে ৭৮ জন নিহত হয়েছে। হামলার পর ইজরায়েল জানিয়েছে যে তেহরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখার জন্য এই অভিযান লাগাতার চলবে।
উল্লেখ্য ইজরায়েল ও ইরান দু’জনেই ভারতের বন্ধুরাষ্ট্র। ফলে ইরান ইজরায়েল দ্বন্দ্বে কোনও ভাবেই পক্ষ নেওয়া সম্ভব নয় ভারতের পক্ষে। তাই এক্ষেত্রে নিরপেক্ষ থেকে শান্তির কথা তুলে ধরাই ভারতের নীতি। এদিন মোদির বক্তব্যেও কার্যত সেই ইঙ্গিতই মিলেছে।