ম্যাঞ্চেস্টার: বৃষ্টি কমেছে। সামান্য রোদের দেখাও মিলেছে। কিন্তু স্যাঁতসেঁতে ভাব এখনও কাটেনি। বুধবার থেকে ম্যাঞ্চেস্টারের ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের মাঠে শুরু হতে চলেছে অ্যান্ডারসন-তেন্ডুলকার সিরিজের চার নম্বর টেস্ট। ভারত জিতলে সিরিজে সমতা ফেরাবে। পঞ্চম টেস্টের গুরুত্ব বজায় থাকবে। আর ইংল্যান্ড জিতলে বেন স্টোকসরা সিরিজ জিতে নেবেন।
এমন মরণবাঁচন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে টিম ইন্ডিয়ার বিস্তর সমস্যার সামনে। চোট-আঘাতের কারণে ভারতীয় শিবির এখন প্রায় হাসপাতাল। শুভমান গিলের টিম ইন্ডিয়া কি কঠিন পরিস্থিতির চ্যালেঞ্জ সামলে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে চলতি সিরিজে? তাছাড়া ভারতীয় দলের কম্বিনেশন নিয়েও ধোঁয়াশা কাটেনি এখনও। এমন পরিস্থিতিতে আজ ওল্ড ট্র্যাফোর্ড স্টেডিয়ামে ভারতীয় দলের অনুশীলনের সময় দেখা গিয়েছে বাইশ গজে ভালোরকম ঘাস রয়েছে। সঙ্গে পিচ ও আউটফিল্ডে রয়েছে স্যাঁতসেঁতে ভাব। যার প্রভাব বুধবার খেলা শুরু হলে ম্যাচে কতটা পড়বে, সময় তার জবাব দেবে। তার আগে টিম ইন্ডিয়ার কোচ গৌতম গম্ভীর আপাতত ডুবে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড ক্লাবের সংস্কৃতিতে।
২০১৪ সাল থেকে বেশ কয়েকবার বিলেত সফরে এসেছেন গম্ভীর। অতীতে এসেছিলেন ক্রিকেটার হিসেবে। এবারের ভূমিকাটা ভিন্ন। কোচ হিসেবে অগ্নিপরীক্ষার সামনে গম্ভীর। সঙ্গে রয়েছে সিরিজ বাঁচানোর চ্যালেঞ্জও। এমন অবস্থায় ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের মাঠে আজ চূড়ান্ত অনুশীলন শুরুর আগে গতকাল দলকে নিয়ে গম্ভীর হাজির হয়েছিলেন লাল ম্যাঞ্চেস্টারের অন্দরমহলে। সেখানে ম্যাঞ্চেস্টারের ফুটবলারদের সঙ্গে দেখা করে সময় কাটানোর পাশে কোচ রুবেন অ্যামোরিমের সঙ্গেও জমিয়ে আড্ডা দিয়েছেন গম্ভীর। ফুটবল ও ক্রিকেট কোচের আড্ডার নির্যাস হিসেবে সামনে এসেছে আজ ভিন্ন তথ্য। জানা গিয়েছে, ইউনাইটেডের কোচ রুবেনের ভাবনা, পরিকল্পনা, আবেগ ও ফুটবল দর্শন ছুঁয়ে গিয়েছে টিম ইন্ডিয়ার কোচের মন। ইংল্যান্ডের সংবাদমাধ্যমে সেকথা জানিয়েছেন গম্ভীর। বলেছেন, ‘২০১৪ সাল থেকে নানা সময়ে ইংল্যান্ড এসেছি। ম্যাঞ্চেস্টারও নতুন নয় আমার কাছে। কিন্তু এবারের অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ নতুন। লাল ম্যাঞ্চেস্টারের অন্দরমহলে দীর্ঘসময় কাটিয়েছি আমরা। ওদের কোচ রুবেনের সঙ্গেও কথা হয়েছে। খেলা নিয়ে ওর আবেগ, দর্শন আমার ভালো লেগেছে। পরিকল্পনা রয়েছে, ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের মতো সংস্কৃতি আমরা ভারতীয় দলে যদি শুরু করতে পারি।’
কেন এমন পরিকল্পনা, তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন গম্ভীর। ক্রিকেটের মতো ফুটবলও দলগত খেলা, সেই প্রসঙ্গ টেনে টিম ইন্ডিয়ার কোচ বলেছেন, ‘ফুটবল ও ক্রিকেট দুটি ভিন্ন খেলা ঠিকই। কিন্তু একটা মিল হল, দুটি খেলাই পুরোপুরি দলগত। যেখানে সবরকম পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চ্যালেঞ্জ থাকে সবসময়ই।’ সবুজ ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের ‘অভিশাপ’ কাটিয়ে কীভাবে টিম ইন্ডিয়া সিরিজে ঘুরে দাঁড়াতে পারে, সেটাই এখন দেখার। শুভমানরা সফল হলে সেই সাফল্যের নেপথ্যে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড সংস্কৃতি কতটা কাজ করে, সেটাও এখন দেখার।