অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা: মাঠে নেমে আগ্রাসী ক্রিকেট খেল। বাকি সময় ফুরফুরে মেজাজে থাক। জীবন ও সময় উপভোগ কর!
বছর কয়েক আগে যখন তিনি ইংল্যান্ড টেস্ট দলের দায়িত্ব নিয়েছিলেন, কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম তাঁর দলের অধিনায়ক বেন স্টোকস ও তাঁর সতীর্থদের এমনই মন্ত্র দিয়েছিলেন।
ঠিক সেই মন্ত্র এবার ইংল্যান্ড সাদা বলের ক্রিকেটেও দেখা যাবে। কোচ বাজ (ম্যাককুলামের ডাকনাম) জস বাটলারদের ভারতে হাজির হওয়ার আগেই সেই মন্ত্র দিয়েছিলেন। আগামীকাল টিম ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে টি২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামার আগে সেটাই বাস্তবে করে দেখাতে চাইছে ইংল্যান্ড। আগ্রাসী ক্রিকেটের জন্য কীভাবে নিজেদের তৈরি করছেন বাটলাররা?
শুনতে অবাক লাগলেও জবাব হল প্যাডেল স্পোর্টস! টেনিস, স্কোয়াশ, ব্যাডমিন্টনের অদ্ভুত এক মিশেল। সঙ্গে রয়েছে গলফও। যা পুরোটাই কোচ ম্যাককুলামের মস্তিষ্কপ্রসূত। কলকাতায় হাজির হওয়ার পর থেকেই ইংল্যান্ড কোচ এভাবেই তাঁর দলকে চনমনে থাকার মন্ত্র দিয়ে চলেছেন। সেই মন্ত্র বাস্তবে কতটা সফল হবে, আগামীকাল সন্ধ্যার ইডেনেই তার প্রমাণ মিলবে। তার আগে আজ দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত প্রায় তিন ঘণ্টা ইডেন গার্ডেন্সে অনুশীলন করলেন ফিল সল্টরা। দুপুরের ইডেনে অধিনায়ক বাটলার সাংবাদিক সম্মেলন শেষ করার কিছুক্ষণ পরই ইংল্যান্ডের তরফে সমাজমাধ্যমে প্রথম একাদশ ঘোষণাও করে দেওয়া হল। এমন পরিকল্পনাও কোচ বাজের উর্বর ক্রিকেট মস্তিষ্কের ফল।
দলের কোচের আগ্রাসী পরিকল্পনার ছবি অধিনায়ক বাটলারের সাংবাদিক সম্মেলনেও। দুপুরে চওড়া হাসি ও ভরপুর আত্মবিশ্বাস নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে হাজির হওয়ার পর তাঁকে প্রথম প্রশ্নই করা হয়েছিল দীর্ঘ সফরের সময় পরিবার সঙ্গে থাকা কতটা জরুরি? অন্য কোনও ক্রিকেটার হলে এমন প্রশ্নের সামনে ‘ডাক’ করতেন। বাটলার স্টেপআউট করলেন। ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের অস্বস্তি বাড়িয়ে বলে দিলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি পরিবার সঙ্গে থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আধুনিক দুনিয়ায় আমরা সবাই খুব ব্যস্ততার মধ্যে থাকি। অনেক সময় এমন হয়, যখন দীর্ঘসময় পরিবার থেকে দূরে থাকতে হয়। করোনা পরবর্তী সময়ে এটাই এখন দস্তুর। তাই আমার মনে হয় পরিবার সঙ্গে থাকলে একজন ক্রিকেটারের ভালোই হয়। ক্রিকেটে কোনও প্রভাব পড়ে বলে তো মনে হয় না।’ পরিবার ও ক্রিকেটের মধ্যে ভারসাম্য একটু চেষ্টা করলেই বজায় রাখা সম্ভব। তাছাড়া পরিবার সঙ্গে থাকলে অনেক সময় মানসিক চাপও সহজে কেটে যায় বলে মনে করছেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক। বাটলারের কথায়, ‘পরিবার ও ক্রিকেটের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখাটা ম্যানেজ করাই যায়। তাছাড়া পরিবার সঙ্গে থাকলে মানসিক চাপ, টেনশনও অনেক সময় দ্রুত কেটে যায়।’
ইংল্যান্ড অধিনায়ক বাটলারের সঙ্গে তাঁর বিপক্ষ দলের কোচ, অধিনায়করা একমত হবেন কিনা, জানা যায়নি। কিন্তু ঘটনার ঘনঘটা ও ধুন্ধুমার বিতর্কের মধ্যে থাকা ভারতীয় ক্রিকেটের নয়া পর্ব বুধবার ক্রিকেটের নন্দনকাননে শুরু হতে চলেছে। তার আগে আজ ইংল্যান্ড অনুশীলনে বাঁহাতি স্পিনারদের বিরুদ্ধে হ্যারি ব্রুক, লিয়াম লিভিংস্টোন, বেন ডাকেটরা অনেকটা সময় অনুশীলন করেছেন। হয়তো ভারতের মাটিতে শেষ সিরিজে ইংল্যান্ডের দুঃস্বপ্ন হিসেবে হাজির হওয়া ভারতীয় দলে নতুন সহ অধিনায়ক অক্ষর প্যাটেলকে সামলানোর মন্ত্র খুঁজছিলেন তাঁরা।
বাস্তব যাই হোক না কেন, খেলা শুরুর চব্বিশ ঘণ্টা আগে টিম ইন্ডিয়াকে চাপে ফেলার মানসিক প্রস্তুতিটা দারুণভাবেই শুরু করে দিয়েছেন বাটলাররা।