Heliport | ধোতরে-তে হেলিপোর্টের তোড়জোড়, আকাশপথে সান্দাকফু-কাঞ্চনজঙ্ঘার সৌন্দর্য উপভোগের হাতছানি

Heliport | ধোতরে-তে হেলিপোর্টের তোড়জোড়, আকাশপথে সান্দাকফু-কাঞ্চনজঙ্ঘার সৌন্দর্য উপভোগের হাতছানি

ভিডিও/VIDEO
Spread the love


রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি : ভ্রমণপ্রেমীদের সব সময় হাতছানি দিয়ে ডাকে পাহাড়। পর্যটকদের সিংহভাগই হয় ছোট গাড়ি নয়তো মোটরবাইকে সওয়ার হয়ে দার্জিলিং, কার্সিয়াং, মিরিকের বাঁকে বাঁকে ঘুরে বেড়ান। ভাবুন তো একবার, হেলিকপ্টারে চেপে আপনি পাহাড়ের উপর চক্কর কাটছেন। উপভোগ করছেন সান্দাকফু, কাঞ্চনজঙ্ঘা সহ পাহাড়ের নৈসর্গিক সৌন্দর্য। কি স্বপ্ন মনে হচ্ছে তো? সবকিছু ঠিক থাকলে এই স্বপ্নই এবার সত্যি হতে চলেছে। সৌজন্যে রাজ্য সরকার এবং গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ)।

রাজ্য ও জিটিএ পাহাড়ে হেলিকপ্টার পরিষেবা চালু করতে চায়। মিরিকে আগেই হেলিপ্যাড তৈরি হয়েছে। সেখানে হেলিকপ্টার নামিয়ে মহড়াও হয়েছিল। এবার দার্জিলিং থেকে কিছুটা দূরে ধোতরে-তে হেলিপোর্টের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে, জাতীয় সুরক্ষার স্বার্থে এখনই কালিম্পংকে নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে না। জিটিএ’র ভাইস চেয়ারম্যান রাজেশ চৌহান বলেছেন, ‘ধোতরে-তে একটা জায়গা হেলিপোর্টের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে ইতিমধ্যে জমি তৈরির কাজও শুরু হয়েছে। এর বেশি কিছু এখনই বলা সম্ভব নয়।’

প্রকল্পের বাস্তবায়ন হলে আকাশপথে পাহাড়ের পাশাপাশি পর্যটকরা কাঞ্চনজঙ্ঘা এবং সান্দাকফুর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। দার্জিলিংয়ের আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক মিল্টন দাস বলেছেন, ‘ধোতরে-তে হেলিপোর্ট তৈরির জন্য প্রস্তাব রয়েছে। পূর্ত দপ্তর হেলিপোর্ট তৈরির জন্য ডিটেইলড প্রোজেক্ট রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরি করছে। পাহাড়ের পর্যটনের স্বার্থে এই হেলিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হয়ে যাবে।’

সিকিমের পর্যটনে হেলিকপ্টার পরিষেবা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা নিয়েছে। বাগডোগরা থেকে সিকিম হেলিকপ্টার পরিষেবা যেমন পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়, তেমনই গ্যাংটক এবং পেলিং থেকে আকাশপথে সিকিম ঘুরিয়ে দেখানোর পরিষেবাও যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়েছে। পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলছেন, এক-দেড় মাস আগে থেকে হেলিকপ্টারের আসন বুকিং না থাকলে আকাশপথে সিকিম-দর্শনের সুযোগ মিলবে না।

সিকিমের পথে হেঁটে দার্জিলিং পাহাড়ের পর্যটনকে জনপ্রিয় করার দাবি দীর্ঘদিন ধরে উঠছে। মিরিকে একটি হেলিপ্যাড রয়েছে। সুবাস ঘিসিংয়ের আমলে ১৯৯১ সালে সেটি তৈরি করা হয়েছিল। সেই সময় দার্জিলিং গোর্খা হিল কাউন্সিলের প্রধান সুবাস ঘিসিং তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আর ভেঙ্কটরামনকে দার্জিলিংয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। রাষ্ট্রপতির জন্যই মিরিকে ওই হেলিপ্যাড তৈরি করা হয়েছিল। ভেঙ্কটরামনের কপ্টার নেমেছিল সেখানে। তারপর থেকে যদিও হেলিপ্যাড অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে ছিল। ২০২১ সালে রাজ্য সরকার সমস্ত পার্বত্য অঞ্চলকে হেলিকপ্টার পরিষেবায় যুক্ত করার নীতি গ্রহণ করে। ২০২২ সালে মিরিকের হেলিপ্যাডটিকে নতুনভাবে তৈরি করা হয়। সেখানে ৭ ডিসেম্বর ২০২২-এ হেলিকপ্টার নামিয়ে মহড়াও হয়েছিল। কিন্তু সেখানেই বিষয়টি থমকে যায়।

ফের পাহাড়ের পর্যটনে হেলিকপ্টারকে জুড়তে উদ্যোগী হয়েছে পরিবহণ দপ্তর। জিটিএ’র সহযোগিতায় ধোতরে-তে হেলিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে।

কী এই হেলিপোর্ট? পরিবহণ আধিকারিকরা বলছেন, হেলিপ্যাডে সাধারণত একটি মাত্র হেলিকপ্টার ওঠানামার পরিকাঠামো থাকে। কিন্তু হেলিপোর্টে একসঙ্গে একাধিক হেলিকপ্টার ওঠানামা করতে পারবে। সেজন্য সেখানে একাধিক অবতরণ ব্লক তৈরি করা হবে। পাশাপাশি এখানে হোটেল, কাফেটারিয়া থেকে শুরু করে অন্য পরিষেবাও থাকবে।

দার্জিলিংয়ের আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক বলেছেন, ‘ধোতরে থেকেই মিরিক এবং দার্জিলিংকে আকাশপথে ঘুরিয়ে দেখানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’

পর্যটন ব্যবসায়ী সম্রাট সান্যালের বক্তব্য, ‘সিকিমের হেলিকপ্টার পরিষেবা অত্যন্ত জনপ্রিয়। এর টানেই প্রচুর মানুষ সিকিম বেড়াতে আসেন। দার্জিলিংয়েও হেলিকপ্টার পরিষেবা চালু হলে খুব ভালো হবে। আকাশপথে দার্জিলিং, মিরিক, সান্দাকফু এবং ভারত-নেপাল সীমান্ত দেখার সুযোগ পেলে পর্যটকের সংখ্যাও বাড়বে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *