সৌরভকুমার মিশ্র, হরিশ্চন্দ্রপুর: একটা সময় রাজ্যে মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর নামটা উঠে এলে পাশাপাশি উঠে আসত এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের তৎকালীন মন্ত্রী বীরেন্দ্রকুমার মৈত্র তথা বিশুবাবুর নাম। জেলার ফরওয়ার্ড ব্লকের শেষ কথা ছিলেন বিশুবাবু। এখনও যে এলাকায় বিশুবাবুর ক্যারিশমা রয়েছে, তা কান পাতলেই শোনা যায়। তবে তাঁর মৃত্যুর পর ফরওয়ার্ড ব্লক জেলায় অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। বছর ঘুরলেই রাজ্যের বিধানসভা ভোট। বিশুবাবুর আবেগকে কাজে লাগিয়েই সেই জায়গা কিছুটা হলেও পুনরুদ্ধার করতে চাইছে তারা। ভোটের বছরখানেক আগে মালদা জেলা ফরওয়ার্ড ব্লক হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভার ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০৫টি বুথে কমিটি তৈরি করতে শুরু করল তারা। ইতিমধ্যেই প্রায় ৮০টি থেকে ৯০টি বুথ কমিটি তৈরি করে ফেলেছে তারা। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বাকিগুলিও তৈরি হয়ে যাবে।
১৯৮৭ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বীরেন্দ্র বিধায়ক পদে ছিলেন। কৃষিজ বিপণন দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পূর্ণমন্ত্রী হয়েছিলেন। তাঁর আমলে দীর্ঘদিন ধরে হরিশ্চন্দ্রপুর ফরওয়ার্ড ব্লকের দুর্ভেদ্য দুর্গ ছিল। তবে বীরেন্দ্রর অবর্তমানে সংগঠন কি দুর্বল হয়ে পড়েছে? মানতে নারাজ ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক শ্রীমন্ত মিত্র। তাঁর কথায়, ‘হরিশ্চন্দ্রপুর সহ জেলার বেশ কয়েকটি আসনে আমাদের সংগঠন মজবুত। দলকে ঢেলে সাজাতে আমরা ইতিমধ্যেই বুথ কমিটি তৈরি করছি।’ রাজ্যে যেভাবে ব্যাপক দুর্নীতি চলছে, তাতে আগামী নির্বাচনে মানুষ দুর্নীতিপরায়ণ সরকার থেকে মুখ ফেরাবে বলেই আশাবাদী শ্রীমন্ত। তবে আগামী নির্বাচনে কে প্রার্থী হবেন, সে বিষয়টি তিনি খোলসা করেননি।
এমনিতে বিধানসভায় বামেরা সম্মিলিতভাবেই শূন্য। তার পরেও ফরওয়ার্ড ব্লকের মালদা জেলা কমিটির সদস্য তথা কিষান সভার জেলা সভাপতি অজিত সাহা দাবি করেছেন, ‘এলাকার দিনমজুর, শ্রমিক, সাধারণ মানুষ সকলেই এখনও চায় আবার ফরওয়ার্ড ব্লক ফিরুক। আমরা বুথ কমিটি তৈরি করতে গিয়ে সাধারণ মানুষের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। আগামী বছর অবাধ শান্তিপূর্ণ বিধানসভা নির্বাচন হলে ফরওয়ার্ড ব্লক উল্লেখযোগ্য ভালো ফল করবে।’
২০১৬ এবং ২০২১ সালে হরিশ্চন্দ্রপুর থেকে ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী হয়েছিলেন শিক্ষক রফিকুল আলম। ’১৬-এর বিধানসভা নির্বাচনে ৩৫ হাজারের কিছু বেশি ভোট তিনি পেয়েছিলেন। যদিও ’২১-এর নির্বাচনে তাঁর প্রাপ্ত ভোটের পরিমাণ কমে যায়। রফিকুল জানান, আগামী নির্বাচনে এলাকায় দুর্নীতি বন্ধ করতে মানুষ আমাদের পাশে থাকবে এটাই আমাদের আশা।