হলদিবাড়ি: কাজ শেষ হওয়ার চার মাস অতিক্রান্ত হতে না হতেই ধসে গিয়েছিল পথশ্রী প্রকল্পের রাস্তার বিভিন্ন অংশ। অভিযোগ, তারপরও বেশ কয়েক মাস কেটে গিয়েছে। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত অংশের সংস্কার হয়নি। এতে এলাকায় ঝাঁ চকচকে রাস্তা থাকলেও গ্রামে বড় গাড়ি ঢুকতে পারছে না। এতেই ক্ষোভ বাড়ছে হলদিবাড়ি ব্লকের বক্সিগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের কাজের জন্য রাস্তাটি বেহাল হয়ে পড়ে। অথচ কাজের মান খতিয়ে না দেখে বিল মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সংস্থাকে।
গ্রাম পঞ্চায়েতটির প্রাণ মজুমদার জুম্মার মোড় থেকে বোয়ালমারি হাট মসজিদ পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা পথশ্রী প্রকল্পে পাকা করা হয়। রাস্তাটির জন্য ব্যয় হয় ৬৮ লক্ষ ৫২ হাজার ২৬৭ টাকা। স্থানীয়দের বক্তব্য, প্রয়োজনের তুলনায় কম পাথর বিছিয়ে মাটি নরম থাকা অবস্থায় পিচ দেওয়া হয়। পর্যাপ্ত জল ও রোলার করা হয়নি। অর্থাৎ শিডিউল মেনে কাজ হয়নি। কাজের ক্ষেত্রে কোনও নজরদারি ছিল না সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ারের। ফলে অল্প বৃষ্টিতে মাটি বসে গিয়েছে। ফেটে গিয়েছে পিচের আস্তরণ। এছাড়াও জলাশয় সংলগ্ন এলাকায় রাস্তার অধিকাংশ ধসে গিয়েছে। বেহাল এমন রাস্তায় সমস্যায় পরা আলাউদ্দিন আহমেদ, আব্দুল সালেমদের কথায়, রাস্তাটি করার সময় নিম্নমানের কাজের বিষয়টি নজরে আসে। হাতের ঘষাতেই পিচের চাদর উঠে আসছিল। সে সময় বহুবার কাজে বাধা দেওয়া হয়। একপ্রকার জোর করে রাস্তার কাজ শেষ করা হয়েছে। এখন কাজ শেষ হতেই রাস্তাটি বেহাল হয়ে গিয়েছে। লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তৈরি রাস্তা এলাকার মানুষের কোনও কাজে আসছে না। নতুন রাস্তা হলেও জরুরি কাজে যাতায়াত করতে হচ্ছে ঘুরপথে। স্থানীয় গৃহবধূ রূপসনা প্রধান বলছেন, ‘রাস্তার পাশে থাকা জলাশয়ে কংক্রিটের পাইলিং দেওয়ার কথা থাকলেও, বাঁশ ও প্লাস্টিক দিয়ে পাইলিং দেওয়া হয়েছে। এর ফলে সামান্য বৃষ্টিতে সেই পাইলিংয়ের পাশাপাশি রাস্তার একাংশ ধসে গিয়েছে। রাস্তাটি সংকীর্ণ হয়ে গিয়েছে।’ তাঁর অভিযোগ, রাস্তা তৈরির ক্ষেত্রে বড়সড়ো দুর্নীতি হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। তাঁর মতোই রবিউল আহমেদের অভিযোগ, এলাকার উন্নয়নের জন্য রাজ্য সরকার অর্থবরাদ্দ করলেও, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার ও বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদারের যোগসাজশে সুষ্ঠু পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকার মানুষ। ইতিমধ্যে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নজরে আনা হয়েছে বলে জানান বক্সিগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান স্বর্ণলতা মল্লিক। হলদিবাড়ির বিডিও রেনজি লামো শেরপা জানান, রাস্তাটির তথ্য সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারের নজরে আনা হবে।