উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ ‘নাটক এখানেই শেষ’, গাজার উদ্দেশ্যে যাত্রা করা ত্রাণবাহী নৌকা ‘ম্যাডলিন’-কে আটকে দেওয়ার পর এমনটাই বিবৃতি দিয়েছে ইজরায়েলের বিদেশ মন্ত্রক। ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (FFC) পরিচালিত এই নৌকাটি গাজায় আরোপিত ইজরায়েলি অবরোধ ভেঙে যুদ্ধবিধস্ত গাজার নাগরিকদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছিল। নৌকাটিতে ১২ জন ক্রু ও কর্মী ছিলেন, যাদের মধ্যে রয়েছেন সুইডিশ পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। ইজরায়েলি কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, বর্তমানে জাহাজটিকে একটি ইজরায়েলি বন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
তবে এফএফসি(FFC) একে ‘অবৈধ আটক’ ও ‘অপহরণ’ বলে আখ্যা দিয়েছে । সংগঠনটি পূর্বে রেকর্ড করা একটি এসওএস (SOS) ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে গ্রেটাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘আমার নাম গ্রেটা থুনবার্গ, আমি সুইডেন থেকে এসেছি। আপনি যদি এই ভিডিওটি দেখেন, তাহলে বুঝবেন আমরা আন্তর্জাতিক জলসীমায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী অথবা ইসরায়েল সমর্থিত বাহিনীর হাতে বাধাপ্রাপ্ত ও আটক হয়েছি।’
এই ঘটনাটি ইজরায়েল-প্যালেস্টাইন ইস্যুতে নতুন করে কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে এবং গাজার ওপর ইসরায়েলের দীর্ঘমেয়াদি সামুদ্রিক অবরোধের বৈধতা নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিতর্ক আরও ঘনীভূত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ম্যডলিন নৌকাটি সোমবার গাজার উপকূলে পৌঁছে ‘প্রতীকী’ মানবিক সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল যাতে দীর্ঘদিন ধরে সেখানে চলতে থাকা মানবিক সংকট নিয়ে আন্তর্জাতিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা যায়। তবে, রবিবার রাতেই জাহাজটি গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই ইসরায়েলি বাহিনী তা দখলে নেয়। এমনটাই জানানো হয়েছে ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (FFC)-এর সমাজমাধ্যমে প্রকাশিত এক বার্তায়।
ইজরায়েলি বিদেশ মন্ত্রক পরবর্তীতে নিশ্চিত করেছে যে, ‘ম্যাডলিন’ এখন ইজরায়েলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এক্স (X) প্ল্যাটফর্মে দেওয়া এক বিবৃতিতে তাঁরা ব্যঙ্গাত্মকভাবে লিখেছে, ‘সেলিব্রিটিদের ‘সেলফি ইয়ট’ এখন নিরাপদে ইসরায়েলের উপকূলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। যাত্রীরা শিগগিরই নিজ নিজ দেশে ফেরত যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ‘সেলফি ইয়ট’-এর সকল যাত্রী সুস্থ ও অক্ষত রয়েছেন। তাঁদের স্যান্ডউইচ ও জল সরবরাহ করা হয়েছে। নাটক এখানেই শেষ।’
এই বিবৃতিতে গ্রেটা থুনবার্গসহ জাহাজের অন্যান্য যাত্রীদের উপস্থিতিকে হালকাভাবে দেখানোর এই চেষ্টা আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনা ও প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। গ্রেটাদের এই মিশনকে যারা মানবিক সহায়তা ও নৈতিক প্রতিবাদের অংশ হিসেবে দেখছেন এমন বহু মানুষ ইতিমধ্যেই এর তীব্র সমালোচনা করেছেন।