বিপ্লব হালদার, গঙ্গারামপুর: প্রতিদিন স্কুল খোলার পর যেভাবে ছাত্র, শিক্ষকের কলরবে গমগম করত স্কুল, কিন্তু এদিন ছিল তার উলটো চিত্র। ভারাক্রান্ত মনে অফিস রুমে বসেছিলেন কয়েকজন শিক্ষক। তাদের মুখে যেন কোনও কথা নেই। বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংখ্যা ছিল ১৫ জন। তার মধ্যে ৭ শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়েছে। এতে শিক্ষকের অভাবে বেশ কয়েকটি বিষয়ে পঠনপাঠন বন্ধ হওয়ার মুখে। ফলে চিন্তায় পড়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকরা।
গঙ্গারামপুর ব্লকের সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত অশোকগ্রাম ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর উচ্চবিদ্যালয়। বিদ্যালয়ে প্রায় ৮৪৫ জন পড়ুয়া রয়েছে। এতদিন ১৫ জন শিক্ষক ক্লাস নিতে। গতকাল দেশের শীর্ষ আদালতের রায়ে অন্য স্কুলের শিক্ষকদের সঙ্গে অশোকগ্রাম ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর উচ্চবিদ্যালয়ের ৭ জন শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়েছে। মাত্র ১৫ জন শিক্ষকের মধ্যে ৭ জন শিক্ষকের চাকরি বাতিল হতে এক ধাক্কায় শিক্ষকের সংখ্যা এসে দাঁড়াল আটে। ৭ জন শিক্ষকের চাকরি বাতিল হতে বেশ কয়েকটি বিষয়ে পঠনপাঠন বন্ধ হওয়ার মুখে। কীভাবে চলবে স্কুল, তা নিয়ে দুচিন্তায় এলাকার মানুষজন সহ শিক্ষক -শিক্ষিকারা।
অশোকগ্রাম ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর উচ্চবিদ্যালয়ে ইতিহাসের শিক্ষক ছিলেন ২ জন। ২ জন শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়েছে। এডুকেশনের ১জন শিক্ষক ছিলেন। সেই শিক্ষকেরও চাকরি বাতিল হয়েছে। দর্শনের ১ জন শিক্ষক এতদিন ক্লাস নিতেন। তাঁর চাকরিও বাতিল হয়েছে। বাংলায় রয়েছেন ২ জন শিক্ষক। তার মধ্যে ১ জনের চাকরি বাতিল হয়েছে। প্রধান শিক্ষক সহ জীবনবিজ্ঞানের শিক্ষক ছিলেন ২ জন। তার মধ্যে ১ জনের চাকরি বাতিল হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে একসঙ্গে চারটি বিষয়ে শিক্ষক সংখ্যা শূন্য হয়ে পড়ায় পঠনপাঠন বন্ধ হওয়ার মুখে। কীভাবে ক্লাস চলবে, সে নিয়ে শোরগোল পড়েছে। একসঙ্গে একটি স্কুলের ৭ শিক্ষকের চাকরি বাতিল হতেই এদিন গোটা স্কুল ছিল থমথমে।
অশোকগ্রাম ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সনাতন পালের সঙ্গে কথা বলতেই বলে উঠলেন, ‘মন ভালো নেই। একসঙ্গে আমাদের বিদ্যালয়ের ৭ শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়েছে। এতে কয়েকটি বিষয়ে ক্লাস বন্ধ হয়ে যাবে। পরীক্ষা চালানো মুশকিল হয়ে পড়ছে। মাঝখানে ছেলেমেয়েদের কীভাবে ক্লাস করাব সেই নিয়ে চরম দুচিন্তায় রয়েছি। কিছুই ভালো লাগছে না।’