গঙ্গারামপুরঃ ভরদুপুরে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে তোলাবাজির ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল গঙ্গারামপুরে। সেই ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ রীতিমতো ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এই ভিডিও ফুটেজ সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে শহরজুড়ে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়ে গিয়েছে তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে রাজনৈতিক তরজা।
জানা গিয়েছে, ঘটনাটি গঙ্গারামপুর ব্লকের বেলবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কাদিঘাট এলাকায় ৫১২ জাতীয় সড়কের পাশে অবস্থিত একটি দোকানের। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, শনিবার ভরদুপুরে দোকানে প্রবেশ করে দুই যুবক। এরপরেই দোকান মালিকের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় তাদের। এরপরেই পকেট থেকে বন্দুক দেখিয়ে ভীতি প্রদর্শন করে টাকা আদায়ের চেষ্টা করে। সেই সময়ই এই দুই দুষ্কৃতীর নজরে আসে দোকানে থাকা সিসি ক্যামেরা। তৎক্ষণাৎ চম্পট দেয় তারা। এদিন বিকেলেই দোকান মালিক গঙ্গারামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এবিষয়ে দোকানের মালিক অভিজিৎ দাস জানান, ‘শনিবার দুপুরে দুজন অচেনা যুবক দোকানে আসেন। তারা এসে বন্দুক দেখিয়ে হুমকি দেন। জানতে চায় দোকানের দোকানের প্রধান মালিক অর্থাৎ আমার বাবা কোথায় রয়েছেন, সেটা জানবার চেষ্টা করেন। দোকানের সামনে আমাদের নির্মাণ কাজ হচ্ছে, সেই বিষয়ে বিভিন্ন কথা বলেন। তারা টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকার করায় বচসা হয়। টাকা না পেয়ে দোকান থেকে চলে যান। এরপর বিষয়টি গঙ্গারামপুর থানাকে জানানো হয়। লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।’
এদিকে সিসিটিভির ফুটেজ পেয়েই তদন্তে নামে গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ। সেই ফুটেজ দেখে পুলিশ চিহ্নিত করেছে দুই দুষ্কৃতীকে। দুই অভিযুক্ত বর্তমানে পলাতক। এক অভিযুক্তের বাড়িতে হানা দিয়ে পুলিশ কিছু কার্তুজ উদ্ধার করেছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
অন্যদিকে এই ঘটনার সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বিজেপি। ঘটনার নিন্দা করেছেন স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক সত্যেন্দ্রনাথ রায়। বিজেপির দাবি, পিন্টু ঘোষ নামে স্থানীয় তৃণমূল নেতা জড়িত এই ঘটনায়। অভিযুক্ত দুষ্কৃতীদের সঙ্গে তৃণমূলের সরাসরি যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি।
এবিষয়ে গঙ্গারামপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি শংকর সরকার জানান, ‘বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমের কাছে প্রথম জানলাম। অস্ত্রের বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবার অনুরোধ করা হবে। বিষয়টি দলগতভাবে খতিয়ে দেখা হবে। এই ঘটনার সঙ্গে দলের কেউ জড়িত থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসায়, স্বাভাবিকভাবে বেশ কিছু প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে। গঙ্গারামপুরের মতো শান্তিপূর্ণ এলাকায় অবাধে বন্দুক ঢুকছে কীভাবে? যুবকদের হাতে কীভাবে অবাধে বন্দুক পৌঁছে যাচ্ছে? আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করেছে কে বা কারা? পুলিশ তথা প্রশাসনিক নজরদারি কোথায়?