রায়গঞ্জ: জাল এসসি সার্টিফিকেট কাণ্ডে নাম জড়াল খোদ জেলা পরিষদের সভাধিপতির। এনিয়ে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে রাজ্য সরকারের অনগ্রসর কল্যাণ দপ্তরের প্রধান সচিব ও উত্তর দিনাজপুরের জেলা শাসকের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছে জাতীয় তপশিলি জাতি কমিশন। প্রায় পাঁচ মাস আগে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী বিরাজ বিশ্বাস এ বিষয়ে কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তার ভিত্তিতেই উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি পম্পা পালের বিরুদ্ধে জাল এসসি সার্টিফিকেট ব্যবহারের অভিযোগে তদন্ত শুরু করে জাতীয় তপশিলি জাতি কমিশন। এই ঘটনায় বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল।
সরকারি নথি থেকে জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রায়গঞ্জ সাব-ডিভিশনাল অফিস থেকে পম্পা পালের নামে একটি ওবিসি সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়। অথচ তাঁর নামেই আবার ২০২৩ সালের ১১ অগাস্ট একটি এসসি সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছে। কীভাবে একই ব্যক্তির নামে দুইবার দুইরকম কাস্ট সার্টিফিকেট ইস্যু করা হল, তা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে। শোরগোল পড়ে যায় রাজনৈতিক মহলে। বিষয়টি আদালত পর্যন্তও পৌঁছায়।
অভিযোগকারী আইনজীবী বিরাজ বিশ্বাস বলেন, ‘জেলা পরিষদের সভাধিপতি পম্পা পালের জাল এসসি সার্টিফিকেটের বিষয়ে আমিই জাতীয় তপশিলি জাতি কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই কমিশন রাজ্যের অনগ্রসর কল্যাণ দপ্তরের সচিব ও উত্তর দিনাজপুরের জেলা শাসককে চিঠি পাঠিয়ে রিপোর্ট তলব করেছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রিপোর্ট জমা না করা হলে কমিশন সরাসরি সমন জারি করবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছে।’
এ প্রসঙ্গে উত্তর দিনাজপুরের জেলা শাসক সুরেন্দ্রকুমার মিনার কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি এবং হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো মেসেজেরও উত্তর মেলেনি। অন্যদিকে, জেলা পরিষদের সভাধিপতি পম্পা পাল ফোন রিসিভ করেননি। ফলে তাঁরও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
এ বিষয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি নিমাই কবিরাজ বলেন, ‘এই ঘটনা থেকেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে কীভাবে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ উপায়ে শংসাপত্র তৈরি করছে রাজ্যের তৃণমূল নেতারা। আর বঞ্চিত হচ্ছেন যোগ্য সাধারণ জনগণ। সার্টিফিকেট জাল করে যে জেলা পরিষদের সভাধিপতি হয়েছেন, তা এবার প্রমাণিত হবে।’
এদিকে তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, ‘যাঁরা কাস্ট সার্টিফিকেট ইস্যু করেছেন, তাঁরা রিপোর্ট দেবেন। রিপোর্টে সব লেখা থাকবে।’