উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: আমেরিকার (America) সঙ্গে নিউ স্টার্ট চুক্তির (New Begin Settlement) মেয়াদ আরও এক বছর বৃদ্ধি করতে চান রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin)। সোমবার নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে এমনটাই জানালেন পুতিন। এই নিউ স্টার্ট কথাটির অর্থ হল পরমাণু অস্ত্র সংবরণ সংক্রান্ত চুক্তি। ওই চুক্তিটি ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যে ১৫ বছর আগে হয়েছিল। ২০২৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি শেষ হচ্ছে ওই চুক্তির মেয়াদ।
২০১০ সালের ৮ অক্টোবর আমেরিকা এবং রাশিয়ার মধ্যে পরমাণু অস্ত্র সংবরণ সংক্রান্ত ওই চুক্তিটি স্বাক্ষর হয়। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ছিলেন বারাক ওবামা। আর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন পুতিন ঘনিষ্ঠ রুশ সিকিউরিটি কাউন্সিলের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি আনাতোলিয়েভিচ মেদভেদেভ।
তবে পুতিন জানিয়েছেন, পুরো ব্যপারটি নির্ভর করছে আমেরিকার উপর। তারা চাইলে তবেই ওই চুক্তির মেয়াদ বাড়বে।
পুতিন বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী পরমাণু অস্ত্রের বিস্তার রোধ করার জন্য চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি প্রয়োজন। আমি মনে করি চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি হলে আমেরিকা এবং রাশিয়ার মধ্যে আলোচনার দরজা খুলে যাবে।’
পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যা হ্রাস করার লক্ষ্যে রাশিয়া ও আমেরিকার মধ্যে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, কৌশলগত আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, ডুবোজাহাজের ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, বোমারু বিমানের সংখ্যা এবং আণবিক ওয়ারহেডের সংখ্যা সংক্রান্ত তথ্য একে অপরের সঙ্গে দেওয়া-নেওয়া করা হবে। বিশ্বের ৯০ শতাংশ পরমাণু অস্ত্র রয়েছে ক্রেমলিন ও ওয়াশিংটনের কাছে। সম্ভবত ওই কারণে পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা দূর করতে এই চুক্তি করছিল দুই দেশ।
ওই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী দু’পক্ষই খোলা জায়গায় তাদের বোমারু বিমানগুলি রাখত। কারণ কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে যাতে স্পষ্ট ভাবে সেগুলিকে দেখা যায়। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের সময় এই চুক্তির ফল ভোগ করতে হয় রাশিয়াকে। খোলা জায়গায় মস্কোর টিইউ-১৬০ এবং টিইউ-৯৫-এর মতো শক্তিশালী বোমারু বিমান থাকায় তা উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়ত। রাশিয়ার অভিযোগ, ওই তথ্যের ভিত্তিতে ইউক্রেন অনেক বার ওই বিমানগুলির উপর হামলা করেছে। ফলে কিছু বিমান ধ্বংসও হয়। সেই সময় অনেকেই মনে করেছিলেন, চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে আসতে পারে রাশিয়া। তবে পুতিনের কথায় আপাতত সেই সম্ভাবনা আর নেই বললেই চলে।
এদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পুতিনের উপর ক্ষিপ্ত আমেরিকা। ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় বার প্রেসিডেন্ট পদে বসার পর বলেছিলেন, তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাবেন। এনিয়ে দুই পক্ষের সঙ্গে কথাও বলেন। তবে এখন পর্যন্ত যুদ্ধ থামেনি। এত কিছুর পরেও আমেরিকার সঙ্গে পুরনো চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে নিজের মত জানালেন পুতিন।