দুর্গাপুর: ‘এরপর দিদির গাড়িতে হামলা হবে, বেশি দেরি নেই।’ সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনই বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে এক অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মীর বিরুদ্ধে। আর এরপরই নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয় ওই অবসরপ্রাপ্ত রেল কর্মীকে। ধৃতের নাম বাদল লস্কর, বাড়ি দুর্গাপুরে। দিন দুয়েক আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন বিতর্কিত মন্তব্যটি করেছিলেন বাদল লস্কর। এরপরেই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বাদল লস্করের সেই পোস্টটিকে উল্লেখ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেন। তাতে কুণাল লেখেন, ‘কে এই বাদল? খুঁজে বের করা হোক।’ এরপরই সেই সূত্র ধরে দুর্গাপুর থানায় বিষয়টি নিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের আইনজীবী সুদীপ দেবনাথ। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার রাতে দুর্গাপুরের অশোক অ্যাভিনিউ থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বাদল লস্করকে। সোমবার সকালে ধৃতকে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়।
ঘটনাপ্রসঙ্গে অভিযোগকারী সুদীপ দেবনাথ বলেন, ‘এই ব্যক্তির উস্কানিমূলক মন্তব্যের কারণে দুষ্কৃতিরা উৎসাহিত হয়ে পড়তে পারে। তারা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাণহানির চেষ্টা হতে পারে। তাই তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছি।’ আর এই ঘটনা ঘিরে ইতিমধ্যেই ইস্পাত নগরীতে শুরু হয়েছে জোর রাজনৈতিক তর্জা।
এই বিষয়ে দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কখন কি বলেন তিনি নিজেই তা জানেন না। আর সেই জন্যই বাংলার মানুষ কমেন্ট শুরু করেছেন। এবার তো বাংলার মানুষেরা রাস্তায় নামবেন। তাঁরা প্রতিবাদ করবেন ও গাড়ি আটকাবেন।’ পুলিশ কত জনকে গ্রেপ্তার করবে বলেও এদিন প্রশ্ন তোলেন বিজেপি বিধায়ক। অপরদিকে এই প্রসঙ্গে রাজ্যের পঞ্চায়েত গ্রামোন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘আমরা হতচকিত ও অবাক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়িতে হামলা হতে পারে বলে কেউ মন্তব্য করতে পারেন? তাও আবার সোশ্যাল মিডিয়ায়? শুভবুদ্ধি সম্পন্ন কোনও মানুষের মনে এই রকম কোন চিন্তা আসতেই পারে না। যারা এই ধরনের মন্তব্য করেন বা করবেন তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ প্রশাসন নিশ্চয়ই আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে বলে আমাদের আশা।’ ঘটনাপ্রসঙ্গে পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুরু করা হয়েছে তদন্ত।’