অমৃতা দে, দিনহাটা: খুব ছোট পরিসরে বাড়ির উঠোনে বাঁশ, খড় আর কাপড় দিয়ে বানানো একচালা ঘর থেকে যাত্রা শুরু হয়েছিল। ধীরে ধীরে আটিয়াবাড়ি এলাকার বড় আটিয়াবাড়ি মহিলা সমন্বয় দুর্গাপুজো (Durga Puja 2025) কমিটির উৎসব এখন অনন্য মাত্রা পেয়েছে। মহিলারাই এই পুজোর মূল উদ্যোক্তা। তাঁরাই সমস্ত দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে পুজোর প্রতিটি দিক সফলভাবে পরিচালনা করেন।
গত কয়েক বছর ধরে পুজো কমিটি থিমভিত্তিক পুজো শুরু করছে। কমিটির এবছরের থিম কুজনে বোধন। বিষয়বস্তুতেও অভিনবত্ব রয়েছে। থিমের মাধ্যমে সমাজে এক ভিন্ন সামাজিক বার্তা তুলে ধরাই সদস্যদের লক্ষ্য। তাঁদের মতে, বর্তমানে শখ করে পাখিকে খাঁচায় বন্দি রাখেন অনেকে। তাতে পাখিদের কষ্ট হয়। সেই বিষয়টিকে পুজোমণ্ডপের মধ্য দিয়ে তুলে ধরা হবে। পাখির কলরবে ভরে উঠবে পুরো এলাকা।
পুজোর মণ্ডপসজ্জা, প্রতিমা নির্মাণ থেকে শুরু করে আলোকসজ্জা সবকিছুর মধ্যেই থিমের ছাপ থাকবে বলে জানা গিয়েছে। এলাকারই এক মাঠে মণ্ডপ সাজানোর কাজ শুরু হয়েছে। পাখির খাঁচার আদলে মণ্ডপ তৈরি করছেন স্থানীয় শিল্পীরা।
পুজো কমিটির সভাপতি শেফালী ভৌমিকের কথায়, ‘আমরা খুব ছোট করে এই আয়োজন শুরু করেছিলাম। এখন বড় আকারে হলেও আমরা স্থানীয় মৃৎশিল্পী, আলোকশিল্পী, ঢাকি এবং পুরোহিতের সাহায্যেই পুজো করি।’ এবার এই পুজো ঘিরে বাজেট প্রায় ৫ লক্ষ টাকা। এর বড় অংশ স্থানীয় মানুষের অনুদান ও মহিলাদের নিজস্ব প্রচেষ্টায় জোগাড় হয়েছে বলে জানান কমিটির সদস্যরা। পাড়ার প্রতিটি বাড়ি ও প্রতিটি মানুষ এই উৎসবে যুক্ত থাকেন।
শুধুমাত্র পুজোই নয়, তার সঙ্গে নানা সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কর্মসূচিও পালিত হবে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় গান, নাচ ও নাটকের আসর বসবে। পাশাপাশি স্থানীয় শিশুদের প্রতিভা প্রকাশের জন্য নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। অষ্টমীর দিন মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়।
পুজো কমিটির সম্পাদক আশা বর্মন সরকার জানান, চতুর্থীর দিন পুজোমণ্ডপের উদ্বোধন হবে। দশমী পর্যন্ত চলবে পুজোর আনন্দ, খাওয়াদাওয়া এবং সাংস্কৃতিক উৎসব।
আগে পুজোর আনন্দ উপভোগ করতে এলাকার মানুষকে হেঁটে দূরে যেতে হত। তবে এলাকার ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে বয়স্ক মানুষ বিশেষ করে মহিলাদের সেই আক্ষেপ ঘোচাতে সচেষ্ট হন কয়েকজন বধূ। নিজেদের এলাকায় তাঁরা দুর্গাপুজো শুরু করেন।