পূর্ণেন্দু সরকার, জলপাইগুড়ি: তিস্তা নদীর ড্রেজিংয়ের (Dredging) দায়িত্ব রাজ্য খনিজ উন্নয়ন নিগমকে দিলেও ডুয়ার্সের ভুটান সীমান্তবর্তী (Bhutan border) কয়েকটি নদীর ড্রেজিং অন্য এজেন্সিকে দিয়ে করানোর পরিকল্পনা করছে সেচ দপ্তর। আপাতত জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলার বেশ কয়েকটি নদীর সেডিমেন্টেশন স্টাডি রিপোর্ট (কী পরিমাণ বালি ও নুড়ি জমেছে) রাজ্য সেচ দপ্তরে পাঠিয়েছে সেচ দপ্তরের উত্তর-পূর্ব বিভাগ। চলতি বছর বর্ষার পর নদীগুলিতে যাতে ড্রেজিং করা হয়, সেই প্রস্তাবও রাজ্য সেচ দপ্তরে পাঠিয়েছে তারা।
বিভাগের চিফ ইঞ্জিনিয়ার কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক বলেন, ‘জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারের এই নদীগুলি থেকে ৭০ হাজার টন থেকে দেড় লক্ষ টনের মতো বালি, নুড়ি, ডলোমাইট গুঁড়ো তুলতে ড্রেজিংয়ের প্রস্তাব রাজ্যকে পাঠানো হয়েছে। আগামী বর্ষার আগে ড্রেজিং শেষ করা হবে। টেন্ডার করে কোনও এক এজেন্সিকে ড্রেজিংয়ের বরাত দেওয়া হবে।’
বিভাগ সূত্রে খবর, আলিপুরদুয়ারের ভুটান সীমান্তবর্তী বীরপাড়ার কাছে ডিমডিমা, পাগলিঝোরা, মাদারিহাটের ডয়ামারা, কালচিনির বাসরা এবং মাদারিহাটের কাছে তোর্ষা নদীতেও ড্রেজিংয়ের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে, কোচবিহার মেডিকেল কলেজের সামনে মরাতোর্ষা ও বুড়িতোর্ষা নদীতেও ড্রেজিং করা হবে। জলপাইগুড়ি জেলার বানারহাটের কাছে রেতি-সুকৃতি, মালবাজারের ঘিস এবং মেটেলির জুরন্তি নদীতে ড্রেজিং করার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে রাজ্যকে।
প্রতি বছর বর্যায় এই নদীগুলির পরিস্থিতি খুবই বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। ভুটানের ভারী বৃষ্টিতে যখন-তখন এই নদীগুলিতে হড়পা আসে। নদী পার্শ্ববর্তী এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। এই দুরবস্থা থেকে ডুয়ার্সের ভুটান সীমান্তবর্তী কিছু এলাকার মানুষকে রেহাই দিতেই নদীগুলিতে ড্রেজিং নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। বিষয়টি নিয়ে ফোনে সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া বলেন, ‘কেন্দ্রকে বারবার জানিয়েও ভারত-ভুটান যৌথ নদী কমিশন গঠন হয়নি। ডুয়ার্সের ভুটান সীমান্তবর্তী এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্র কোনও টাকা দিচ্ছে না। তাই নিজেরাই ড্রেজিংয়ের উদ্যোগ নিচ্ছি।’ আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালের মন্তব্য, ‘ভুটান পাহাড়ের পাদদেশ সংলগ্ন এলাকার মানুষ জানেন ভুটানে ভারী বৃষ্টি হলে কী অবস্থা হয়। বালি, নুড়ি, ডলোমাইটে নদীগুলি ভরাট হয়ে যাচ্ছে। রাজ্য কয়েকটি নদীতে ড্রেজিংয়ের পরিকল্পনা নেওয়ায় ভালো হয়েছে।’